একটু ইউটোপিয়ার কথা হোক? হ্যাঁ? বেশি না, বছর তিনেক পরে।
দিল্লি কলকাতা মুম্বাই এখন স্পটলেস ক্লিন। যেদিকে তাকাবেন নো সাইন অফ নেড়ি কুত্তা। কর্পোরেশন সব তুলে সাফ করে দিয়েছে। এখন কুত্তা মানেই বকলস দেওয়া বিলিতি হাইব্রিড। বেশিদিন বাঁচেও না, ইনস্টা স্টোরি ফোরি রিল ফীল হয়ে যাচ্ছে এটাই শান্তি।
বিল্লি ফিল্লি সিনেই নেই। এসব আচ্ছে দিনে নোংরা জানোয়ার রাস্তায় থাকবে নাকি? পার্শিয়ান ক্যাট বাড়িতে থাকতেই পারে, নট ইন রাস্তা।
আপনি একটু ওয়াক করতে বেরিয়েছেন।ডক্টর বলেছেন ওয়াক করতে। অ্যানজাইটি কমবে। বাচ্চাটার ধুম জ্বর। আয়া পাওয়া চাপ, কাগজ ফাগজ নিয়ে ঝামেলা হচ্ছে বলে তল্লাটে কেউ নেই। আপনি একা সামলাচ্ছেন। অ্যানজাইটি হবেই। একটু ওয়াক করে চলে যাবেন। কুত্তা বিল্লি নেই যখন দারুন ওয়াক হবে। রাস্তায় কুকুরের গু ফু দেখে ওয়াক পাবে না। ভিখিরি হোমলেসদের তো তুলে সমুদ্রে ফেলেই দিয়েছে। কি ঝকঝকে চারপাশ। এখন যেখানে খুশি ফোটো খিচিক।
জল তেষ্টা পাচ্ছে। বাড়িতে সিপার ফেলে এসেছেন। চারপাশে এত দোকান কোথাও জল নেই। হিমালয়ান ওয়াটার কোম্পানিগুলো ফেল মেরেছে। অত ফ্ল্যাশ ফ্লাড হলো না? এদিকে সব কালারফুল ড্রিংক। ওদিকে গাছ ফাছ ছিলো আগে। পাখি এসে নোংরা করত। এখন সব ক্লিন। দারুণ সব দোকান। মল। সফ্ট ড্রিংক খাবেন? দূর ওসব বারণ। একটু দাঁড়িয়ে ডিপ ব্রিদ করুন। ইশ ইঁদুর পচা গন্ধ আসছে কেন? ওয়াক থু!
আরে আবার কাশিটা ফেরত এলো? ইশ মাস্ক কোথায়? পড়ুন পরুন। লিপ গ্লস ঘেঁটে যাক, পার্থেনিয়াম আছে নাকি এদিকে? কি ন্যাসটি ব্যাপার! একটা পোস্ট দিন তো দাঁড়িয়ে?
ঠিক তখনই কলটা এলো। আপনাকে ডকুমেন্ট দেখাতে ডেকে পাঠিয়েছে সরকারি কাগজ দফতর। নো এজেন্ট বিজনেস। কল রাখতেই আবার ফোন। এবারে বাড়ি থেকে। আপনার অশীতিপর বাপ মাকেও কাগজ দফতর ডেকে পাঠিয়েছে। যেতে হবে। নো এজেন্ট বিজনেস। হোলি শিট! ওই অফিসে কি এসি আছে? এই গরম পলিউশন, এর মধ্যে নন এসি অ্যারেঞ্জমেন্ট হলে কি করে হবে? তারপর কালকেই ডেট। এদিকে পেস্ট কন্ট্রোল আসার কথা কাল। ইঁদুর বেড়েছে খুব, সব কেটে নাশ করছে।
আপনার “কী করে হবে” প্যানিকটা বাড়ছে যখন ঠিক তখনই। পায়ের গোছে কূট করে কি কামড়ালো? পাশ দিয়ে হু হু করে গাড়ি যাচ্ছে, মানুষ যাচ্ছে। কারুর টাইম নেই দেখার। আপনি কাশির ধমকে স্পটলেস ক্লিন রাস্তার ওপরে বসে পড়ছেন। চোখে ঝাপসা দেখছেন নাকি? অবশ লাগছে? পায়ের গোছে দুটো বিন্দু ক্রমশ বড় হচ্ছে।
ইউটোপিয়ায় থাকতে গেলে এটুকু সইতে পারবেন না?