ভূমিকা
মেঘমল্লার বিভূতিভূষণের প্রথম গল্পগ্রন্থ। ১৯৩১ সালে প্রকাশিত এই ছোটগল্প সংকলনের একটি গল্প মেঘমল্লার।
এই গল্পটি যথাসম্ভব অবিকৃত রেখে আমরা এর নাট্যরূপ দিয়েছি। এখানে নাটকের অংশবিশেষ রইল সংলাপ আকারে।
নির্বাচিত চিত্রনাট্য
প্রদ্যুম্ন (ভয়েসওভার)
দূরে কোন মন্দিরের ঘন্টাধ্বনি শুনতে পাচ্ছি। ঐ যে ঘন বেতবন আর বাঁশের জঙ্গল, তার ওপারে পাহাড়ের কোলে হয়ত আছে কোনো মন্দির, এখন ভালো মনে পড়ে না। শুধু মনে আছে ঐ পাহাড়ের নীচে মগধ থেকে বিদিশার রাজপথ। এমন আরোও অনেক পাহাড় পেরোলে কুমারশ্রেণীর বিহার। মনে পড়ে দশপারমিতার মন্দির। আরতির সময়ে সুনন্দা থাকত রোজ। সুনন্দা! কেমন আছ? প্রদ্যুম্নকে মনে পড়ে আর?
কেমন ভুলভাল বকছি। হয়ত এখন গ্রীষ্মকাল। অনেকদিন ভালো করে জল হয়নি। বৈশাখ? জৈষ্ঠ্য? কটা জৈষ্ঠ্য সংক্রান্তি হল? সেই যে সেবারে মেলা বসেছিল দশপারমিতার মন্দিরে, আর আমি, সুনন্দার সঙ্গে দেখা করার সব প্রতিজ্ঞা ভুলে খুঁজছিলাম সেই বীণ-বাজিয়েকে- সেদিন যদি ভদ্রাবতীর তীরে বসে বাঁশিই শোনাতাম সুনন্দাকে হয়ত সব কিছু অন্যরকম হত?
হয়ত হত না?
আমার এই কাহিনী বড় অদ্ভুত। কিন্তু কে শুনবে? কেই বা বলবে? প্রদ্যুম্নই আজ প্রদ্যুম্নকে বলুক, কেমন? প্রতিরাতের মত?
দশপারমিতার মন্দিরে আমি সেদিন গিয়েছিলাম সুরদাসের সন্ধানে। অবন্তীর বিখ্যাত গাইয়ে ও বীণ-বাজিয়ে - সুরদাস। লোকে বলত তিনি সরস্বতীর বরপুত্র। উৎসবের ভিড়ে তখনই তাঁকে দেখি। এক প্রৌঢ়। পরনে অতি মলিন ও জীর্ণ পরিচ্ছদ। তিনিই যেন আমাকে খুঁজে নিলেন। ভিড় ঠেলে কাছে এসে বললেন -
গুণাঢ্য
আমি অবন্তীর গাইয়ে সুরদাস। তুমি প্রদ্যুম্ন তো? আমাকেই খুঁজছিলে না?
প্রদ্যুম্ন
আমি আশ্চর্য হয়েছিলাম। ইনি কেমন করে আমার মনের কথা জানলেন? সুরদাস বললেন তিনি পিতার বন্ধু। বারাণসীতে আমাকে শিশুকালে দেখেছেন। আমি একবাক্যে বিশ্বাস করলাম। কি ছিল সেই জীর্ণবসন অদ্ভুত-দর্শন গায়কের মধ্যে জানি না। ভিক্ষু বসুব্রতের আঁকা জরার চিত্রের মত কুশ্রী, লোলচর্ম, শীর্ণদর্শন। পুরাতন পুঁথির ভুর্জপত্রের মত মেটে লাল রঙের তাঁর সেই পরিচ্ছদ, পড়ন্ত গোধূলিবেলায় তাঁর কি এক মায়াময় আহ্বান যেন আমাকে সম্মোহন করে নিল। স্থান কাল ভুলে তাঁর সঙ্গে আলাপে মজে গেলাম।
গুণাঢ্য:
তোমার পিতা তো প্রসিদ্ধ গায়ক ছিলেন। তুমি নিজে কিছু শিখেছ?
প্রদ্যুম্ন:
একটু-আধটু বাঁশি বাজাতে পারি
গুণাঢ্য:
পারা তো উচিত। তোমার পিতাকে চিনত না এমন লোক এদেশে খুব কম আছে। প্রতি উৎসবে কৌশাম্বী থেকে তাঁর নিমন্ত্রণ পত্র পেতাম। তা, তুমিও শুনেছি ভালোই বীণ বাজাও? তোমার বাঁশিতে মেঘমল্লার শুনব একদিন শোনাবে?
প্রদ্যুম্ন:
বিশেষ কিছু যে জানি তা নয়, যা মনে আসে বাজাই। তবে মেঘমল্লার মাঝে মাঝে বাজিয়েছি।
গুণাঢ্য:
কৈ শোনাও দেখি, কেমন শিখেছ?
প্রদ্যুম্ন
বাঁশি সবসময় আমার কাছে থাকত। কখন কোন সময়ে সুনন্দার সঙ্গে দেখা হয়ে পড়ে বলা যায় না। বাজালাম অল্প। সুরদাস উচ্ছ্বাসে যেন দিশাহারা হয়ে গেলেন।
গুণাঢ্য:
চমৎকার, চমৎকার। এসো, বুকে এসো। ইন্দ্রদ্যুম্নের পুত্র যে এমন হবে সে বেশী কথা কী? বুঝতে পেরেছি তুমিই পারবে, এ আমি আগেও জানতাম। শোন প্রদ্যুম্ন, একটা গোপনীয় কথা আছে তোমার সঙ্গে। অনেকদিন ধরে খুঁজছি তোমাকে এই কারণেই। কথাটা তোমাকে বলা, কিন্তু তার আগে তোমাকে প্রতিজ্ঞা করতে হবে যে, একথা তুমি কারুর কাছে প্রকাশ করবে না।
প্রদ্যুম্ন:
কি কথা না শুনে কি করে-
গুণাঢ্য:
তুমি ভেবো না, কোনো অনিষ্টজনক ব্যাপার হলে আমি তোমাকে বলতাম না। প্রতিজ্ঞা করলে তো? এই তো, লক্ষ্মী ছেলে। শোনো, নদীর ধারে একটা ভাঙা মন্দির আছে জানো তো? ওখানে একটা ঢিবি আছে দেখেছ? ওই ঢিবিটা বহু প্রাচীনকালে সরস্বতী দেবীর মন্দির ছিল। বহু বহু যুগ আগের কথা। শুনেছি এদেশের যত বড় বড় গায়ক ছিলেন তাঁরা সকলে শিক্ষা শেষ করে আগে ওই মন্দিরে এসে দেবীর পূজা দিয়ে তাঁকে তুষ্ট না করে ব্যবসা আরম্ভ করতেন না। বহুকাল আগের কথা, মন্দির ভেঙেচুরে এখন এই ঢিবি হয়েছে। লোকে এখন এর মাহাত্ম্য গেছে ভুলে। কিন্তু দেবী সরস্বতী? তিনি ভোলেননি।
কথিত আছে, আমার মত খুব হাতেগোনা কিছু লোক জানে, আষাঢ়, শ্রাবণ, ভাদ্র এই তিন পূর্ণিমায় আবাহন করলে তিনি এখনও দেখা দেন
প্রদ্যুম্ন:
দেখা দেন? দেবী সরস্বতী?
গুণাঢ্য:
শুধু তাই নয়। এই তিন পূর্ণিমায় তাঁকে ঠিকমত আবাহন করে তুষ্ট করলে তিনি বর দেন। গায়ক সিদ্ধি পায়। কোনো রাগ, কোনো ছন্দ, কোনো তাল তখন আর গায়কের অজানা থাকে না।
প্রদ্যুম্ন:
সত্যি?
গুণাঢ্য:
বিশ্বাস না হয় দেখ এই পূর্ণিমায় তাঁকে আবাহন করে? মেঘমল্লার তাঁর প্রিয় রাগ। কী বল? আমার সঙ্গে চেষ্টা করে দেখবে নাকি?
প্রদ্যুম্ন:
আমি - আমি-
গুণাঢ্য:
তোমার অমত আছে?
প্রদ্যুম্ন:
না না, তা নয়। কিন্তু সত্যিই তাঁকে দেখতে পাব? এও কি সম্ভব?
গুণাঢ্য:
বেশ তো। হাতে কলমে নিজেই পরীক্ষা করে দেখ? সামনের পূর্ণিমায় আমি সব ব্যবস্থা করে রাখি।
প্রদ্যুম্ন:
আচ্ছা রাখবেন, আমি আসব।
গুণাঢ্য:
বেশ বেশ। বড় আনন্দিত হলাম। তুমি এসো তাহলে। আর শোনো, কথাটা গোপন রেখ। পাঁচকান হলে মেলা বসে যাবে। জানই তো হট্টমেলায় অজ্ঞানতার বাস। দেবী ধারকাছ মাড়াবেন না।
প্রদ্যুম্ন
আমি কথা দিয়েছিলাম এই গুপ্তকথা কাউকে বলব না। আমার মনে তখন অধীর কৌতূহল। দেবী সরস্বতীকে চাক্ষুষ দেখতে পাব? সত্যিই শ্বেতপদ্মের মত গায়ের রং তাঁর? আচার্য বসুব্রত বলেন বটে এই মূর্তি হিন্দুদের কল্পনা। কিন্তু তাঁকে স্বচক্ষে দেখতে পেলে আর-
আমার একবারও মনে হয়নি এর মধ্যে কোনো ষড়যন্ত্র আছে। একবারও প্রশ্ন জাগেনি এই লোকটি কী চায়। আমি ভাবতেও পারিনি কি সর্বনাশ হতে চলেছে।
সেই সন্ধ্যায় তুমি বড় অভিমান করেছিলে সুনন্দা। আমার সামনে দিয়ে চলে গেলে একদল মেয়ের সঙ্গে। আমাকে দেখেও দেখলে না। পাহাড়ের ঢাল বেয়ে লাফাতে লাফাতে নেমে এসেছিলাম আমি যেন ঝর্ণার সঙ্গে পাথর। তারপর তুমি দৃষ্টির আড়াল হয়ে গেলে। আমি রাগের চোটে ঠিক করলাম যেটুকু ত্রিপিটকের পাঠ আয়ত্ত করেছি সব ভুলে যাব। এমন সময় একটা গাছের আড়ালে মনে হল কেউ দাঁড়িয়ে। ঠাহর করে দেখি গাছের পাতার ফাঁকে চিকচিকে জ্যোৎস্নার আলো - সেই আলো আঁধারির জালের মাঝে দাঁড়িয়ে- তুমি
সুনন্দা:
ভূতে পাওয়ার মত মুখ করে দাঁড়িয়ে রইলে যে? ঐ সাপুড়েদের থেকে নেশা ভাং শিখছ নাকি আজকাল?
প্রদ্যুম্ন:
বা রে, আমি বুঝি নেশা ভাং করেছি কখনও? সাপুড়েরা তো খেলা দেখায়। ওতে নেশা হয় না।
সুনন্দা:
তবে অমন মুখে চোখে ধাঁধাঁ লেগে আছে যে? ঐ বাজিকরদেরই তো হাঁ করে দেখছিলে সারাদিন ধরে।
প্রদ্যুম্ন:
মোটেও আমি কেবল বাজিকরদের দেখিনি। তুমি তোমার সই সোমদত্তাকে খুঁজলে, তারপরে গ্রামের মেয়েদের সঙ্গে কত কথা বললে, কনকচাঁপা ফুল না পেয়ে দুঃখ করলে। আমার দিকে ফিরেও তাকাওনি। এই এখন আসছিলাম যখন পাশ দিয়ে চলে গেলে, তখনও কথা বললে না। ভালো, আচার্য পূণ্যভদ্রকে বলে দেব আমার এ জীবনে ত্রিপিটক আর আয়ত্ত হবে না। তার পর চলে যাব এখান থেকে।
সুনন্দা:
ও মা, কথা শোনো একবার। কোথায় যাবে শুনি?
প্রদ্যুম্ন:
তোমার সুমুখ থেকে দূরে।
সুনন্দা:
সেই তো। নিজে দেরী করে আসবেন, বাঁশি শোনানোর কথা ভুলবেন। কিন্তু রাগ করার উপায় আমার নেই, উনিই গাল ফুলিয়ে দেশ ছেড়ে যাবার হুমকি দেবেন। হায় রে সুনন্দা, কেমন পাষাণকে মন দিয়েছিস তুই।
প্রদ্যুম্ন:
হুম, পাষাণে বাঁশি বাজাতে পারে?
সুনন্দা:
(হেসে) কী জানি, কানে কম শুনি আজকাল, চোখে কম দেখি- বুড়ি হচ্ছি কিনা
প্রদ্যুম্ন:
বটে? দেখি কটা চুল পেকেছে? কখানা দাঁত নড়েছে?
সুনন্দা:
বড় সাহস হয়েছে তোমার। ছাড়ো ছাড়ো।
প্রদ্যুম্ন:
ছেড়ে দিলে বাঁশি শোনাবো কাকে?
সুনন্দা:
আরে পাগল, এখানে নয়, নদীর ধারে বসব চল। আচার্য জানতে পারলে কিন্তু তোমার কপালে দুঃখ আছে বলে দিলাম প্রদ্যুম্ন
প্রদ্যুম্ন:
দুঃখ আমার চেয়ে ঢের বেশী আচার্যের, এই গাধাকে পিটিয়ে ঘোড়া বানানোর যে ব্রত নিয়েছেন তাতে মহাকোঠঠী বিহারের লোকসান বৈ লাভ দেখতে পাই না।
সুনন্দা:
সে ঠিক।
প্রদ্যুম্ন:
অর্থাৎ আমি গাধা, এই তো?
সুনন্দা:
অর্থাৎ লাভের ভাগ সব সুনন্দার, এই।
প্রদ্যুম্ন:
নেওয়াচ্ছি ভাগ, চল নদীর ধারে। আজ দুই প্রহরের আগে ছাড়ব না।
(গান)
প্রদ্যুম্ন
সেবার শাল পিয়াল তমালের বনে ঘনঘোর বর্ষা নামল। সুনন্দা বলেছিল আমি রোজ মেঘমল্লার বাজাতাম, তাই ঝেঁপে বর্ষা এসেছে। বড় ফাঁকি দিয়েছিলাম তাকে, সে বুঝতেও পারে নি তাকে শোনানোর চেয়েও বেশী এ ছিল আমার প্রস্তুতি।
দেখতে দেখতে এসে গেল আষাঢ় পূর্ণিমা। রাতের বেলায় সুরদাসের কথা মত চুপিচুপি গেলাম সেই ভাঙা মন্দিরে। চারিদিকে অঝোর বৃষ্টি, তরল অন্ধকার। এর মধ্যেই নদীতে স্নান করলাম, সুরদাসের নির্দেশমত। নতুন পট্টবস্ত্র পরে এসে দেখি সুরদাস তার এক সঙ্গীকে নিয়ে হোমে বসেছে। সবার গলায় কুমুদের মালা, ছোট ছোট খুলিতে সলতে দিয়ে প্রদীপ জ্বালা হল। শেষরাত্রে হোম সম্পন্ন হলে সুরদাস বললেন
গুণাঢ্য:
প্রদ্যুম্ন, তুমি এবার তোমার কাজ আরম্ভ কর। খুব সাবধান, তোমার কৃতিত্বের ওপর এর সাফল্য নির্ভর করছে।
প্রদ্যুম্ন
সুরদাসের চোখের ক্ষুধিত দৃষ্টি আমার ভালো লাগল না। তাও বাজাতে আরম্ভ করলাম। ঝিপঝিপ করে বৃষ্টি, ভদ্রাবতীর কুলকুলে স্রোত, মাঠ পেরিয়ে অন্ধকার শালবনের বাতাসে মিশে গেল মেঘমল্লারের আলাপ। হঠাৎ সামনের মাঠটা থেকে সমস্ত অন্ধকার কেটে গিয়ে চারদিক তরল আলোকে প্লাবিত হয়ে গেল। সবিস্ময়ে দেখলাম মাঠের ঠিক মাঝখানে শত পূর্ণিমার জ্যোৎস্নার আলোকমণ্ডলী, এক অনিন্দ্যসুন্দরী তরুণীকে ঘিরে। তাঁর নিবিড় কৃষ্ণ কেশরাজি অযত্নবিন্যস্তভাবে তাঁর অপূর্ব গ্রীবাদেশের পাশ দিয়ে ছড়িয়ে পড়েছে, তাঁর আয়ত নয়নের দীর্ঘ কৃষ্ণপক্ষ্ণ কোন শিল্পীর তুলি দিয়ে আঁকা, তাঁর রক্তকমলের মত পা দুটিকে বুক পেতে নেবার জন্য মাটিতে বাসন্তী পুষ্পের দল ফুটে উঠেছে - এই তো দেবী বাণী। এঁর বীণার মঙ্গলঝংকারে দেশে দেশে শিল্পীদের সৌন্দর্যতৃষ্ণা সৃষ্টিমুখী হয়ে উঠেছে। এঁর আশির্বাদে দিকে দিকে সত্যের প্রাণপ্রতিষ্ঠা হচ্ছে। শাশ্বত এঁর মহিমা, অক্ষয় এঁর দান, চিরনূতন এঁর বাণী।
আমার বিহ্বল চোখের সামনে দেবীর মূর্তি ধীরে ধীরে মিলিয়ে গেল। ঘোরের মধ্যে শুনলাম সুরদাসের গলা
গুণাঢ্য:
হয়েছে। হয়েছে। অবশেষে। ওহে প্রদ্যুম্ন, আমার কাজ এখনও আছে, তুমি ইচ্ছে করলে যেতে পার। রাত শেষ হয়ে এল। কেমন- দেখলে তো? মিথ্যে নয়, দেখলে?
প্রদ্যুম্ন
দেখলাম আধো অন্ধকারে সুরদাসের চোখ জ্বলজ্বল করছে। ঘোরের মধ্যেই তাঁর থেকে বিদায় নিয়ে বিহারের দিকে রওনা দিলাম। মাঠ পেরিয়ে ঘন শাল দেবদারু বনের ধারে পৌঁছেছি, দেখলাম বনের মধ্যে দিয়ে আলো ঠিকরে আসছে। আকাশে চাঁদের গায়ে গ্রহণ লেগেছে, এমন আলো কোথ্থেকে আসবে? পিপুল গাছের ফাঁক দিয়ে উঁকি মেরে দেখলাম - সেই অনিন্দ্যময়ী নারী। দেবী! তাঁর সমস্ত অঙ্গ দিয়ে আলো বেরুচ্ছে, কিন্ত্তু তিনি এমন বিহ্বল হয়ে চারপাশ হাতড়াচ্ছেন কেন? তাঁর আয়ত চক্ষুদুটি অর্ধনিমীলিত। যেন নেশার ঘোরে তিনি পথ খুঁজে বেড়াচ্ছেন, পারছেন না।
হঠাৎ বুকের মধ্যে কেমন তোলপাড় করে উঠল। চারপাশের ঘটনা শুধু অলৌকিক নয়, মনে হল কি যেন অশুভ ইঙ্গিত, কোথাও এক মস্ত বড় ক্ষতি হয়ে গিয়েছে। আমি বিহারের উদ্দেশ্যে দৌড় দিলাম।