কথকতার ছলে জীবনের গল্প বলে মেয়েদের দল Mad Balikas
শুধু তোমার জন্য ব্যানার
সিরিজ: গল্প-গাছা | নাট্যরূপ: পারমিতা বন্দ্যোপাধ্যায়
প্রকাশিত: 26 সেপ্টেম্বর 2021 | সময়কাল: 1 ঘন্টা 29 মিনিট 16 সেকেন্ড
চরিত্রলিপি:
দেবদাস
  • কথক | শ্রেয়া লাহিড়ী
  • দেবদাস | সোমা দে
  • পার্বতী | দীপান্বিতা লাহা
  • চন্দ্রমুখী | অয়ন্তিকা দাস মণ্ডল
  • অন্যান্য | অর্পিতা পাল, প্রিয়াঙ্কা দাস কানুনগো, পারমিতা বন্দ্যোপাধ্যায়
তোমাকে চাই
  • জয় | পারমিতা বন্দ্যোপাধ্যায়
  • ডালিয়া | তৃণা চক্রবর্তী
  • অপাবৌদি | সাগরিকা চৌধুরী
  • ডঃ লাহিড়ী | শ্রেয়া লাহিড়ী
  • নার্স | অয়ন্তিকা দাস মণ্ডল
গান: গীতালি হালদার, তৃণা চক্রবর্তী, শ্রীপর্ণা চ্যাটার্জি, অয়ন্তিকা দাস মণ্ডল, সোমদত্তা মুখার্জি, পারমিতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সোমা দে

ভূমিকা

আসিফা ফেরারী জীবনের শেষ রাতে জ্বরের ঘোরে এক তেঁতুল গাছের সঙ্গে গল্প করছিল। সে গল্পে দেবদাস আছে, বিদ্যাপতি আছেন, রবীন্দ্রসঙ্গীত আছে, আর আছে এক প্রেমের গল্প - তোমাকে চাই। সেসব নিয়েই শ্রুতিনাটক শুধু তোমার জন্য, আসিফা ট্রিলজির দ্বিতীয় অংশ।এর শুরুতে আছে শরৎচন্দ্র চট্টপাধ্যায়ের কালজয়ী উপন্যাস দেবদাস অবলম্বনে শ্রুতিনাটক দেবদাস পাঠ অভিনয়। আর ক্লাইম্যাক্সে আছে ও’হেনরীর “A Service of Love” গল্পের ছায়া অবলম্বনে নির্মিত শ্রুতিনাটক “তোমাকে চাই।”

A Service of Love” মিষ্টি একটা প্রেমের গল্প। মধ্যবিত্ত জো আর ডেলিয়া আমেরিকার সেকেলে অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যে প্রেমটা বজায় রেখে যায়। ও’হেনরী যখন গল্প লিখেছেন আমেরিকায় সরকারিভাবে সমকামী সম্পর্কের জন্য বরাদ্দ ছিল পাগলের চিকিৎসা। তাঁর জো আর ডেলিয়া স্ট্রেট কাপল। কিন্তু এই শ্রুতিনাটকে জয় আর ডালিয়া দুজনেই তো মেয়ে, জয়তী নিজেকে যতই জয় বলুক, সমাজ তাকে চেনে জয়তী বলেই। সে সমাজের ভ্যালিডেশনের মুখে ছাই দিয়ে জয় আর ডালিয়ার সার্ভিস অফ লাভ - “তোমাকে চাই”। এখানে নাটকের অংশবিশেষ রইল সংলাপ আকারে।

নির্বাচিত চিত্রনাট্য

নাটক - তোমাকে চাই

দৃশ্য এক (হাসপাতালের আবহ)

ডালিয়া মিত্রর বাড়ির লোক কে আছেন?

আমি -

আপনি? কে হন আপনি?

আমি - আমি, - ডালিয়া কেমন আছে?

ডঃ লাহিড়ী কথা বলবেন। আইসিইউর সামনে চলে যান।

**********************************************

আমি ডালিয়ার বাড়ির লোক। ম্যাডাম, একটু বলবেন ও কেমন আছে?

ডঃ লাহিড়ী - দেখুন ওনার সেপসিসটা একটু খারাপ দিকে যাচ্ছে। প্রথম দিকে পোড়া জায়গাগুলো ভালোই শুকিয়ে আসছিল। হঠাৎ করেই, কাল রাত থেকে অন্যরকম দেখছি। আসলে বার্ন ইনজুরিগুলো একটু -

দিদি, ও বাঁচবে তো?

ডঃ - আমরা চেষ্টা করছি, উই আর ট্রাইং আওয়ার বেস্ট। আসলে কোমা সেট ইন করে যাচ্ছে

কোমা!

ডঃ - হয়ত ভেন্টিলেটরে দিতে হতে পারে, বন্ড সই করতে হবে। আপনিই -?

দিদি, ও বাঁচবে তো?

ডঃ- উই শ্যাল ট্রাই আওয়ার বেস্ট। আচ্ছা, আপনি কে হন ওনার?

আমি - আমি-

ডঃ - বোন? দিদি?

আমি -

ডঃ - কে হন?

আ - আমি, আমি ওকে ভালোবাসি দিদি। ডালিয়া বাঁচবে তো?

ডঃ- উনিও আপনাকে -

ভালোবাসে, আমাকে পাগলের মত ভালোবাসে দিদি, আমিই বলিনি কখনও, কেন বলিনি…

ডঃ- এখন বলুন।

বলব দিদি। ওর হুঁশ ফিরুক, বলব। ফিরলেই …

ডঃ - এখনই বলুন। ভেতরে যান। যা উনি শুনতে চান, জোরে জোরে বলুন সেই সব কথা। জোরে জোরে ওনার নাম ধরে ডাকুন।

আইসিইউতে জোরে জোরে কথা বলব?

ডঃ- বলবেন। কোমা পুরোপুরি ওনাকে নিয়ে নেবার আগে ওনাকে ফেরাতে হবে। আমরা আমাদের মত চেষ্টা করছি। আপনিও করুন। ভেতরে যান।

*********************************************

জয়

ডালিয়া, ডালিয়া? ও ডালিয়া? একবার বল আমার কথা শুনতে পাচ্ছিস? ও রাক্ষুসী, একবার কথা বল আমার সঙ্গে? ডালিয়া, ডালিয়া? আমি তোর জয়, দেখ আমি সকাল থেকে কিচ্ছু খাইনি। তোকে বাড়ি নিয়ে যাব, তবে খেতে বসব। দুজনে মিলে না বসলে কি খাওয়া হয়, বল ডালিয়া? তোর অত পছন্দের খাবার টেবিলটা বেচে দিয়েছি, মাটিতে বসে খেতে হবে কিন্তু। ভালোই হল, খেয়েদেয়ে তুই ওখানেই রেওয়াজে বসবি, অতটুকু ফ্ল্যাটে আর টেবিল সরানো….ও ডালিয়া? শুনছিস তো আমার কথা? আমি নতুন গান লিখছি ডালিয়া, তুই গাইবি তো? তুই ছাড়া কে গাইবে বল? ও ডালিয়া, আমরা মিছিলে হাঁটব একসঙ্গে, তুই গাইবি গান, জানিস তো আমি গাইতে পারি না, আমার একহাতে থাকবে পোস্টার, আরেক হাতে তোর হাত। ডালিয়া, ডালিয়া, এখনও লড়াই বাকি, কত লড়াই বাকি আমাদের, বল ডালিয়া? ডালিয়া, মনে পড়ে, প্রথম যেদিন তোকে নিয়ে এলাম হষ্টেল থেকে আমার কাছে? ওখানে তোর জুয়াড়ি বর এসে উৎপাত করত, তুই মুখ বুজে সহ্য করতিস। বোকা মেয়ে, একবারের জন্য জয়কে বললে কী হত? এই প্রশ্নটা যেদিন করেছিলাম, মনে আছে কী বলেছিলি?

দৃশ্য দুই (ফ্ল্যাশব্যাক)

ডালিয়া -

উফ, তুই রাগলে কেমন যেন পাগলা হয়ে যাস। তারপরে একটা খুনোখুনি হয়ে যাক। তাই তো বলিনি। আর তাছাড়া সুরেশের উৎপাত আজ নতুন নয়, বরং এখন ও বড় সুযোগ পেয়ে ওঠে না -

জয় - একবার নাগালে পেলে দেখিয়ে দিতাম সুযোগ কাকে বলে। তোর গায়ে হাত তোলে, এত সাহস? ওর হাত, পা সব ভাঙব, যে ঘাড়ে মাথা নিয়ে তোকে কষ্ট দিয়েছে সেই ঘাড় আমি মটকে দেব।

ডালিয়া - তাই তো। ঐ লিকপিকে চেহারা, লো প্রেশার নিয়ে বীরত্বের শেষ নেই দেখি। অ্যাই এদিকে আয়।

জয় - বিশ্বাস হচ্ছে না তো? ভাবছিস মুখে বড় বড় বাতচিত? সুরেশের অফিসটা ধর্মতলায় না? দাঁড়া…

ডালিয়া - আমার ভালো লাগছে না কিন্তু জয়। সুরেশের বৃত্তান্ত চুকিয়ে দিয়েছি, ডিভোর্সটা হয়ে গেছে, ব্যস। আর ও কথা আমি ভাবতেও চাই না।

জয় - ওর জেল হওয়া উচিত ছিল। অন্তত মার খেয়ে হাড়গোড় গুঁড়ো হওয়া উচিত ছিল। কেন যে তোকে ছেড়ে বাইরে গেলাম, কেন গেলাম! আমি থাকলে কেউ পারত না তোকে ঐ জুয়াড়ির সঙ্গে বিয়ে দিতে। একটা খোঁজখবর নিল না কেউ বিয়ের আগে? আমি থাকলে পারত তোকে এরকম ভাসিয়ে দিতে? পারত না কেউ। ভুল হয়ে গেছে, বড্ড ভুল হয়ে গেছে।

ডালিয়া - জয়?

জয় - হুঁ?

ডালিয়া - তুই থাকলে আদৌ বিয়ে করতে দিতিস আমাকে?

কী হল? চুপ করে গেলি যে?

জয় - কিছু না। আজ তোর রিহার্সাল নেই?

ডালিয়া - আজ কপালে দুঃখ আছে রে, বিদ্যাপতি একটুও উচ্চারণ হচ্ছে না ছাই। বাইরের ট্রেনার আসবেন আজ। দেখা যাক। তোর থিয়েটার কতদূর?

জয় - শো আছে সামনের সপ্তাহে। ডালিয়া, মনে হচ্ছে এইমাসের বাড়িভাড়াটা দেরী হবে। ওরা বলেছে শোয়ের পেমেন্ট আসতে দেরী হবে।

ডালিয়া - ইশ আমার গয়নাগুলো ওরা দিল না। থাকলে কটাদিন নিশ্চিন্ত হওয়া যেত।

জয় - মানে, আমি তোর গায়ের গয়না বিক্রি করে সেই টাকায় নাটক করতাম? তোর মনে হয় আমি পারতাম?

ডালিয়া - আমার মনে হয় অনেক কিছুই, সেটা ইম্পর্ট্যান্ট না। তোর মাথাটা যে একেবারে খারাপ হয়ে গেছে সেটাই কথা। নাহ, যাই। এরপরে দেরী গেলে বিদ্যাপতি বৈষ্ণব পদাবলী ছুঁড়ে মারবেন। তাড়াতাড়ি খাওয়া শেষ কর না! আমাকে এগিয়ে দিবি চল।

জয় - একা চলে যা। সব তো একাই পারিস। সুচিত্রা সেন নাকি তুই, যে এগিয়ে দিতে হবে?

ডালিয়া - উফ বাবা, রাগে মরে যাই। থাক তাহলে, উত্তমকুমার জুটল না যখন এ জন্মে, কি আর করা! আরে, আরে, ও কী! বিষম লাগবে। গিলে গিলে খায় ও রকম?

জয় - উত্তমকুমার নয়, এইজন্মে চিন্ময় রায় পেয়েছিস। চল, - এই রে! অপাবৌদি আসছে। তুই একটু হ্যাণ্ডেল করে দে প্লিজ। প্লিজ।

ডালিয়া (চাপা গলায়) - জয়! আমি পারব না। কম্বল মুড়ি দিয়ে শুয়ে পড়লি? ছোটলোক!

অপাবৌদি - কী গো, তোমরা কি নরক গুলজার করছ শুনি?

ডালিয়া - না, মানে, এই বেরোব।

অপাবৌদি - তা সে তোমরা তো সারাক্ষণ বাইরেই ঘোরো। মেয়েজন্ম সার্থক তোমাদের। আমাকেই দেখ, সারাজীবন লোকের নোলার জোগান দিচ্ছি আর হেঁশেল ঠেলছি। তোমার সঙ্গে বসে যে দুদণ্ড আলাপ করব, তার ফুরসত নেই। তা তোমার শ্বশুরবাড়ি কোথায় বলেছিলে? উফ, পাখাটা চালাওনি কেন?

ডালিয়া - ঐ যে দেখুন চাদর মুড়ি দিয়ে শুয়ে আছে। ফ্যান চালাতে দেয় না।

অপাবৌদি - অ, জয়তীর জ্বর টর এল নাকি? দেখ বাবা, ডেঙ্গি হল না তো? হ্যাঁ গো, ডেঙ্গি ছোঁয়াচে না তো?

জয় - আজকাল তো শুনছি নাকি খুব ছোঁয়াচে একটা ভাইরাল হচ্ছে, অনেকটা ডেঙ্গির মত।

অপাবৌদি - অ্যাঁ? ডেঙ্গির মত? ছোঁয়াচে? ওরে বাবা! না, না, উঠো না জয়তী, শুয়ে থাক। কী দরকার! শুধু বাড়িভাড়াটা দিয়ে দিও, মাসের দশ তারিখ হয়ে গেল, আমার খুব অসুবিধে হচ্ছে। তা ডলি, তুমি আছ তো এখন

জয় - ওর নাম ডালিয়া, অপাবৌদি।

অপাবৌদি - হ্যাঁ হ্যাঁ, ডালিয়া। তা তুমিই না হয় ভাড়াটা দিয়ে যেও এসে, আর গল্পও হবে হ্যাঁ? রিসড়ার দিকে আমারও মামাশ্বশুর থাকেন, ওদিকেই বলেছিলে না তোমার শ্বশুরবাড়ি? আহা, জয়তী তুমি আবার উঠছ কেন?

জয় - এই যে, একটু বেরোতে হবে, ডালিয়া, চল। আপনার ভাড়া দিয়ে দেব।

অপাবৌদি - আচ্ছা, আচ্ছা, আমি আসি এখন। তুমি বেশী ঘুরো না বাইরে, ছোঁয়াচে কী একটা হয়েছে বললে। যাই আমি, হ্যাঁ? আসি।

(সামান্য বিরতি)

ডালিয়া - হে বিদ্যাপতি, ক্ষম মোরে! ঘাড়ে একটা পাগল এমনিই ছিল, তার ওপরে বাকি পড়া বাড়িভাড়া যোগ হল। দেরী না হলে নিপাতনে সিদ্ধ হয়ে যেতাম।

জয় - কে পাগল?

ডালিয়া - এই যে, আমি। আর কে?

পরবর্তী অংশ শুনুন ইউটিউবে

আপনার মতামত

এর উত্তরে Some User

এই বিভাগের অন্যান্য পোস্টসমূহ

  • শ্রুতি নাটক - বিদূষক

    বিদূষক

    এডগার অ্যালান পোয়ের ছোটগল্প হপ-ফ্রগ অবলম্বনে শ্রুতিনাটক
    সিরিজ: গা ছমছম | নাট্যরূপ: পারমিতা বন্দ্যোপাধ্যায়
    প্রকাশিত: 31 অক্টোবার 2021 | সময়কাল: 26 মিনিট 25 সেকেন্ড

    এডগার অ্যালান পো “Hop-Frog” নামে একটি ছোটগল্প লিখেছিলেন, যা প্রথম প্রকাশিত হয় ১৮৪৯ সালে। Hop-Frog নামের এক বামন ও বিকলাঙ্গ ব্যক্তি রাজার বিদূষক। তার একমাত্র বন্ধু ছিল ট্রিপেটা নামের এক বামন মেয়ে।রাজা ও তার সাত মন্ত্রী ছিল নিষ্ঠুর ও নৃশংস;  Hop-Frog-কে নিয়মিত অপমান করে, জোর করে মদ খাইয়ে মজা লুটত। এক বিশেষ ভোজসভায় Hop-Frog প্রতিশোধ নেওয়ার সুযোগ খুঁজে পায়।

    হপফ্রগ গল্প হরর, রিভেঞ্জ যত ততটাই মেটাফরিক। রাজা আর তার সাত মন্ত্রীর কাণ্ড দেখে মনে হয়, এরা আদৌ আটটা আলাদা লোক না একই ইউনিট? একটাই রাষ্ট্র, একটাই দফতর, একটাই কুর্সি, সেইরকম না তো? ফ্যাসিজম তো অনেকটা ঐ রাজার মতন, ক্ষমতার মদে দিশেহারা হয়ে যাকে তাকে কামড়ে দেয়। তো কে পারে তার শোধ তুলতে? কী হয় শোধ তোলার পরে? কেমন হয় যদি এই বিন্দুগুলো ঘুরে যায়? পাওয়ার স্ট্রাকচারে যে যেখানে সে সেভাবে তার স্বৈরাচার চালিয়ে যায়, যতক্ষণ তার মেয়াদ। সিংহাসন তার কাজ করে যায়। এইটুকুই?

    এই উত্তরগুলো খুঁজেছি আমরা এই গল্পের অনুপ্রেরণায় লিখিত শ্রুতিনাটক বিদূষকে। এখানে নাটকের অংশবিশেষ রইল সংলাপ আকারে।

  • বিষকন্যা

    বিষকন্যা

    সিরিজ: ইতিহাস কথা কয় | নাট্যরূপ: পারমিতা বন্দ্যোপাধ্যায়
    প্রকাশিত: 05 নভেম্বর 2022 | সময়কাল: 1 ঘন্টা 30 মিনিট 21 সেকেন্ড

    প্রাচীন ভারতীয় রাজনীতির এক অমোঘ দৈব অস্ত্র বিষকন্যা। এক অপরূপা মোহিনী নারী - যে পুরুষ তাঁকে কামনা করে তার সর্বনাশ হয়। সে রাজাই হোক বা অমাত্য। কোনো বাস্তব প্রমাণ নেই এমন অস্তিত্বের, তবু কল্পকাহিনীতে এই নিয়ে কত গল্প হয়েছে তার লেখাজোখা নেই। যেমন, শরদিন্দু বন্দোপাধ্যায়ের প্রবল জনপ্রিয় ঐতিহাসিক কাহিনী বিষকন্যা। ষোড়শ মহাজনপদের এই কাহিনীর আর একটি চিত্রনাট্যরূপ উপন্যাস তিনি লিখেছেন - “বহু যুগের ওপার হতে”।

    আমাদের এই শ্রুতিনাটক এই দুইটি কাহিনীর ছায়া অবলম্বনে নির্মিত। নাটকের প্রেম প্রতিশোধের ট্র্যাক অক্ষুণ্ণ রেখে আমরা উল্কাকে সামান্য বেশি অধিকার দেবার চেষ্টা করেছি। রতিক্রীড়ায় পারদর্শিতাকে ছাপিয়ে রাজনীতির সিদ্ধান্তের অধিকার, তাও পিতৃতান্ত্রিক সিস্টেমের মধ্যে, সেসব চাইলে এক বিষকন্যাকে কতটা কী পেতে হয় এইটুকুই আমাদের খোঁজ এই নাটকে। সংলাপের অংশবিশেষ এখানে থাকল।

  • তিহার থেকে বলছি

    তিহার থেকে বলছি

    সিরিজ: গল্প-গাছা | নাট্যরূপ: পারমিতা বন্দ্যোপাধ্যায়
    প্রকাশিত: 08 মে 2022 | সময়কাল: 1 ঘন্টা 27 মিনিট 25 সেকেন্ড

    শ্রুতিনাটক তিহার থেকে বলছি রবিপ্রেমের ফসল। রবীন্দ্রনাথের তিনটি উপন্যাস শেষের কবিতা, ঘরে বাইরে এবং চতুরঙ্গের কিছু অংশ এক কাল্পনিক চরিত্র আসিফার দৃষ্টিতে পাঠ করব আমরা। আসিফা এক রাজবন্দী। লাবণ্য, বিমলা, দামিনীর অন্বেষণে তার জীবনের শেষ মুহূর্ত মিশে যায়।

    রাজবন্দী আসিফার মোট তিনটি উপাখ্যান আছে, তিহার থেকে বলছি তার প্রথম কিস্তি। নাটকের মৌলিক অংশটি রইল।

  • বর্ষামঙ্গল - গীতি-কবিতা আলেখ্য

    বর্ষামঙ্গল - গীতি-কবিতা আলেখ্য

    সিরিজ: গল্প-গাছা | রচনা: পারমিতা বন্দ্যোপাধ্যায়
    প্রকাশিত: 01 আগস্ট 2021 | সময়কাল: 44 মিনিট

    ভরা বর্ষায় আঁচল পেতে বসে থাকে বঙ্গজননী। নদীনালার কূল ছাপিয়ে বন্যা হবে। কিছু রোয়া ধান ভেসে যাবে। কুঁড়ে গোয়াল ছেড়ে একটা ছাগল কি দুটো মুর্গি সম্বল করে হেঁটে যাবে চাষাভুষোর দল। সম্বচ্ছর উদ্বাস্তু হতে হয় তাদের। গ্রামের নেড়িগুলো অবাক চোখে দেখবে একরত্তি ভেলাগুলোতে তাদের ঠাঁই নেই। পরে, রোগব্যাধি ক্ষয়ক্ষতির ষোলকলা পূর্ণ করে, জল সরবে, রেখে যাবে প্লাবনভূমির উত্তরাধিকার।

    ভরা বর্ষায় জল বাড়ে তাড়াতাড়ি। নদীতে, রাস্তায়, খাদানে কুলি কামিনরা কাজ বন্ধ করবে, কখনও তার আগেই ঘটে যাবে দুর্ঘটনা। ডুবে নিখোঁজ হয়ে যেতে যেতে মজুরদের মনে পড়বে না কতপুরুষ আগে, বিদেশী রাজাদের শিল্পবিপ্লব হওয়ার আগে, তাদের হাতে লাঙল ছিল, জল সরলে তারা সোনা ফলাত। কোনও এক গাঁয়ের বধূর গোলাভরা ধান ছিলো, উঠোনে আলপনা ছিলো। সে থাক। অপঘাত মানুষকে জাতিস্মর করবে এমন কোনো কথা নেই।

    বর্ষামঙ্গল - আমাদের শেকড়ের কথা। গানে কবিতায় ছবি আঁকি।

  • টেগার্টের ডায়েরি চ্যাপ্টার ১ - বিনয় বাদল দীনেশ

    টেগার্টের ডায়েরি চ্যাপ্টার ১

    বিনয় বাদল দীনেশ

    সিরিজ: ইতিহাস কথা কয় | নাট্যরূপ: পারমিতা বন্দ্যোপাধ্যায়
    প্রকাশিত: 23 জানুয়ারী 2022 | সময়কাল: 23 মিনিট 21 সেকেন্ড

    গল্পটা আমাদের মোটামুটি চেনা। ইতিহাস বইয়ে বিনয় বাদল দীনেশের অলিন্দ যুদ্ধের আখ্যান পড়েনি এমন লোক খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। অথচ ব্রিটিশ রাজ যে তাঁদের দেগে দিচ্ছে আর্বান ডাকাত বলে, তা খুব একটা জানা কথা নয়। বিনয় বোস যখন গুলি খেয়ে হাসপাতালে, কমিশনার টেগার্ট সশরীরে গিয়ে বিনয় বোসকে দর্শন দিয়ে এলেন। পরের দিন দেখা গেল বিনয়ের আঙুলের গাঁটগুলো সব ভাঙা।

    অগ্নিযুগে বিপ্লবের জানা-অজানা কাহিনী নিয়ে ব্রিটিশ পুলিশ অফিসারের দৃষ্টিকোণ থেকে তৈরি শ্রুতিনাটক টেগার্টের ডায়েরি। চ্যাপ্টার ১ নির্মিত হয়েছে বিনয়-বাদল-দীনেশের রাইটার্স অভিযানের ওপরে। শ্রুতিনাটকের কিছু সংলাপ এখানে রইল।

  • দ্রোহকাল - তিন পর্ব

    দ্রোহকাল - তিন পর্ব

    সিরিজ: ইতিহাস কথা কয় | নাট্যরূপ: পারমিতা বন্দ্যোপাধ্যায়
    প্রকাশিত: 19 ডিসেম্বর 2021 | সময়কাল: 1 ঘন্টা 36 মিনিট 9 সেকেন্ড

    দ্রোহকাল একটি ঐতিহাসিক কল্পকাহিনী। গৌতম বুদ্ধের সমসাময়িক এই কাহিনী অজাতশত্রুর রাজত্বের প্রথমদিকের ঘটনাবলীর ওপর আধারিত। চারশ নব্বই খ্রীষ্টপূর্বাব্দ নাগাদ অজাতশত্রুর বৈশালী আক্রমণের পর থেকে মগধের তৎকালীন রাজধানী রাজগৃহে এই কাহিনীর সূত্রপাত। রবীন্দ্রনাথের পূজারিণী কবিতায় যে ঘটনার উল্লেখ আছে, এমনকি বাণী বসুর মৈত্রেয় জাতকের দ্বিতীয় পর্বেও যার আভাস পাওয়া যায়, সেই শ্রীমতির অর্ঘ্যদানের দ্রোহ সম্বল করে শ্রুতিনাটক- দ্রোহকাল। তিন পর্বে প্রকাশিত।

    এই কাহিনী আমাদের আসিফা ট্রিলজির শেষ কিস্তিও বটে। তিহার থেকে বলছি এবং শুধু তোমার জন্যর পর আমরা শেষবার দেখা পাব আসিফার। 

    নাটকের প্রধান চরিত্রে আছেন অজাতশত্রু, দেবদত্ত, শ্রীমতি, আম্রপালী এবং এক বিদেশী।

    এখানে নাটকের অংশবিশেষ রইল সংলাপ আকারে।

  • শরতের খোলা খাম ব্যানার

    শরতের খোলা খাম

    সিরিজ: গল্প-গাছা | নাট্যরূপ: তৃণা চক্রবর্তী, পারমিতা বন্দ্যোপাধ্যায়
    প্রকাশিত: 10 অক্টোবার 2021 | সময়কাল: 59 মিনিট 32 সেকেন্ড

    সাদিক হোসেন, সাকিন মুর্শিদাবাদ

    অনামিকা মিত্র, সাকিন উত্তর কলকাতা

    রাজযোটক যে নয় সাদিক-অনামিকা তা জানতে কোষ্ঠীবিচার লাগবে না। দুর্গ্রহলগ্নে ওদের জন্ম। তাই তো নেট পরীক্ষা দিতে গিয়ে পাশাপাশি সিট পড়ে। সময় বুঝে কালি খতম হয়ে যায় সাদিকের। ঝট করে পেন বাড়িয়ে দেয় পাশ থেকে অচেনা অনামিকা। ডটপেনের মূল্যবাবদ পরীক্ষার পরের চা আর প্রজাপতি বিস্কুটটা অফার করে সাদিক। তারপর? অনামিকার গালে টোল পড়ে, সাদিকের গিটারে বোল ধরে, কাশফুলে লাগে দোল। যা হবার তাই হয়। অথচ তখন সদ্য নয়ের দশক। বাবরি মসজিদ অক্ষত। ভাবা যায়?

    সাদিক অনামিকার প্রেমটা বেশিদিন টেকেনি। কিন্তু টেঁকসই প্রেম ঠিক কেমন? এই যে প্রতি পুজোয় এরা এখনও একজন আরেকজনকে মনে করে চিঠি লেখে, লিখে সে চিঠি রেখে দেয় যার যার ডায়রিতে, এটা প্রেম, না অন্য কিছু? এই চিঠি আর কিছু গান কবিতা নিয়ে শ্রুতিনাটক শরতের খোলা খাম। কিছু চিঠি থাকল এখানে আপনাদের জন্য।

  • গঙ্গাহৃদিপদ্মে

    গঙ্গাহৃদিপদ্মে

    সিরিজ: ইতিহাস কথা কয় | নাট্যরূপ: পারমিতা বন্দ্যোপাধ্যায়
    প্রকাশিত: 23 এপ্রিল 2023 | সময়কাল: 1 ঘন্টা 20 মিনিট 31 সেকেন্ড

    "দেবদাসী সুতনুকা রূপদক্ষ দেবদিন্নকে কামনা করিয়াছিল"

    সম্ভবত পৃথিবীর প্রাচীনতম প্রেমপত্র - ছত্তিসগড়ের যোগমারি গুহায় খোদিত হয়ে আছে আনুমানিক খ্রীষ্টপূর্ব তৃতীয় শতক থেকে। কে সুতনুকা কে দেবদিন্ন, কোথা থেকে এসেছিল তারা, পালিভাষায় সত্যিই কী বলতে চেয়েছিল, ইতিহাস তা জানে না।

    কেমন হয় যদি সুতনুকা আর দেবদিন্নের আদি সাকিন হয় আসলে বাংলাভূমি? কৈবর্ত, শূদ্রদের সে রাজত্ব বলকা দেবী, গঙ্গামায়ের দিব্যি দিয়ে বাইরের শত্তুরদের খেদিয়ে এসেছে এতদিন। তাদের বল্লমের নিশানা দেখে তফাত হয়েছেন আলেকজান্দার স্বয়ং। তাদের সোনার বাংলায় বাণিজ্যে ফসলে সমৃদ্ধিতে জ্বলজ্বল করছে চন্দ্রকেতুগড়। হয়ত এই আলেকজান্ডারের গঙ্গাহৃদি?

    এই সব সারেগামা এসে কোথাও মিলবে আমাদেরই সামনে যোগশিরা গুহায়। সুতনুকা আর দেবদিন্নের ভালোবাসার শেষ অঙ্কে। গঙ্গাহৃদিপদ্মে।