কথকতার ছলে জীবনের গল্প বলে মেয়েদের দল Mad Balikas
টেগার্টের ডায়েরি চ্যাপ্টার ৩ - বাঘা যতীন

বাঘা যতীন

সিরিজ: ইতিহাস কথা কয়
প্রকাশিত: 11 আগস্ট 2022 | সময়কাল: 21 মিনিট 38 সেকেন্ড
চরিত্রলিপি:
  • বাঘা যতীন
  • চিত্তপ্রিয়
  • জ্যোতিষ
  • মনোরঞ্জন
  • অমরেন্দ্র
  • টেগার্ট

ভূমিকা

1915 সালে নয়ই সেপ্টেম্বর যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় ওরফে বাঘা যতীন পাঁচজন সহযোদ্ধা নিয়ে তিনশো ইংরেজ সৈন্যর সঙ্গে যুদ্ধ করেন। বালাসোরে বুড়িবালাম নদীর তীরে এই যুদ্ধ ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা আছে। সেই সৈন্যবাহিনীতে টেগার্ট নিজেও ছিলেন গোয়েন্দা বিভাগের তরফে। টেগার্টের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে নির্মিত শ্রুতিনাটকের কিছু সংলাপ এখানে রইল।

নির্বাচিত চিত্রনাট্য

দৃশ্য ১

অমরেন্দ্র

যতীনদা,

বার্লিন থেকে চট্টদার এতদিনের লবি আর তোমার অক্লান্ত পরিশ্রমে এবারে একটা হেস্তনেস্ত হবেই। নরেনদা বাটাভিয়া থেকে চিঠি দিয়েছে। জার্মান প্রতিনিধি থিয়োডোর নিজে বলেছেন নিশ্চিত থাকতে। চেক বিপ্লবীরাও আমাদের সঙ্গে আছে। আমাদের জন্য অস্ত্র শস্ত্র, গোলা বারুদ এমনকি লাখ দুয়েক টাকা অবধি নিয়ে জাহাজ করাচীর উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে। অবশ্য নরেনদা কথা বার্তা বলে সে জাহাজ ঘোরাতে বলেছে বালাসোরের দিকে। নোয়াখালি চট্টগ্রাম অভিমুখে যেতে গিয়েই বালাসোর পড়বে, কাপ্তিপদায় তোমার এতদিন গেরুয়াবসনে অপেক্ষার অবশেষে অবসান হতে চলেছে। কোড ওয়ার্ড হল সুগার। এত কথা লেখার নিয়ম নেই। কিন্তু চিত্তপ্রিয়ের হাতে পৌঁছে দেব, তাই লিখছি। মুখোমুখি তোমার সঙ্গে দেখা করার অনুমতি নেই, অজ্ঞাতবাসের মন্ত্রগুপ্তি যাতে ফাঁস না হয়। অন্তত সুসংবাদটুকু আমি দিই?

যতীনদা, তুমি আমাদের গুরু। হাজার হাজার বাঙালি ছেলে আজ মরার মত করে মরতে চায়, তুমি আমাদের পথ দেখাও যতীনদা। আমাদের ঘরের মেয়েরা অবধি প্রস্তুত। আমার ননীবালা পিসি বলেছেন দেশের জন্য তিনি নিজের হৃদয়টিও উপড়ে ফেলতে রাজি।

তোমার এক কথায় প্রাণ দিতে আমরা প্রস্তুত। ব্রিটিশ সিংহের নখ দাঁত আমরা ভাঙবই, নইলে মিথ্যে এ জীবন, মিথ্যে এ যৌবন।

তুমি যেমন বলেছিলে, রোজ কুস্তির আখড়ায় যাচ্ছি আমরা। চিত্তকে আজ কত করে বললাম ধোবিপাট শেখাই, আমাশা হয়েছে বলে এড়িয়ে গেল। তুমি ওকে অবশ্যই কুইনিন গিলিও।

আমি চললাম লাহোর। আমাদের দেখা হবে যতীনদা, তোমার জন্য পাঠান সৈন্য নিয়ে আসবই আমি, কথা দিলাম।

ইতি - অমরেন্দ্র

টেগার্ট

যতীন মুখার্জি চাকরি ছেড়ে ঠিকাদারির কাজ করত। কিছুদিন ধরেই সে নাকি বাড়ি ফেরে না। সন্দেহ হল। মরিয়া হয়ে টাকা ছড়াতে লাগলাম। এই নেটিভ দেশে কালা আদমিগুলো যেমন লোভী, তেমন স্বার্থপর। ইনাম পেলে আমাদের জুতোর শুকতলা চাটতে আসে এরা করবে বিপ্লব! Good heavens! হাহা। অনুশীলন সমিতি, যুগান্তর দলের এক একটা ঘাঁটি রেইড করতে গিয়ে অবিশ্বাস্য কিছু তথ্য পেলাম। আইরিশ রেভোলিউশনের ইস্তাহার, ম্যাতসিনি, গ্যারিবল্ডির বই! এই কুত্তাগুলোর কাছে এগুলো এল কী করে? আর পেলাম সেই সাধুটা, স্বামী বিবেকানন্দ - ওর বই। পাতায় পাতায় আন্ডারলাইন করা আছে আগামী পঞ্চাশ বছর ইন্ডিয়ানদের একমাত্র আরাধ্য হল দেশ । আর কোনো ধর্ম, কোনো ঈশ্বর নিয়ে ভাবার দরকার নেই।

ইকুয়েশনগুলো মাথায় স্পষ্ট হয়ে গেল। বুঝলাম আমাকে দশ বছর নাকাল করে আমার এক নম্বর আইরিশ শত্রুই তলে তলে বিপ্লবের আঁচ জুগিয়েছেন এতদিন। মার্গারেট এলিজাবেথ নোবেল, নেটিভদের ভগিনী নিবেদিতা। বহু, বহু চেষ্টা করেও ওকে নাগালে আনতে পারিনি, আমাকে ফাঁকি দিয়ে গেছে আমৃত্যু। কিন্তু মরে যাবার পরে এখনও তার জ্বালানো আগুন বারুদ খুঁজছে।

দৃশ্য ২

চিত্তপ্রিয়

ও যতীনদা, তুমি যে আমার জন্য আটকে গেলে! না না, তুমি আমার জন্য ভেবো না। এখুনি তুমি এখান থেকে যাও।

যতীন

বাঘা যতীন পালিয়ে যাবে? তোদের যতীনদাকে এই চিনলি বুঝি চিত্ত?

চিত্তপ্রিয়

যতীনদা তুমি নিজে কানে শুনেছ হাতির ঘন্টি। ইংরেজ হয়ত তোপ কামান সৈন্য নিয়ে আসছে। এখনও সময় আছে যতীনদা। তোমাকে সবাই এখানে সাধুবাবা বলে ভক্তি করে, কেউ আটকাবে না।

যতীন

আমায় আটকায় তেমন সাধ্য কার? সর্দার বলিস না আমাকে তোরা? ইংরেজ সৈন্যর সামনে তোদের ফেলে পালাব তেমন শির-দার আমি নই চিত্ত।

এই পাঁচনটা খেয়ে নে দেখি, বেদনা একটু কমলে তোকে নিয়ে বেরোব। জ্যোতিষ, নীরেন, মনো এগিয়ে গেছে। তোকে কাঁধে নিয়ে আমি হাঁটা লাগাব।

চিত্ত

আমরা পাঁচজনে মিলে পারব যতীনদা? ইংরেজ সৈন্য আসছে। আমাদের গোলাবন্দুকের জাহাজ কতদূর জানিনে। যদি নাই আসে? আমরা - আমরা পারব?

যতীন

পিতামহদের বিরুদ্ধে আমার সবচেয়ে বড় নালিশ কি জানিস? তাঁরা আমাদের জন্য অন্নের সংস্থান করে গিয়েছেন, কিন্তু মৃত্যুর সঙ্গতি রেখে যান নি । তাঁরা তো অমর নন, সেই তো এই নরদেহটা মরলই, কিন্ত মরার মতো মরলেন না কেন? যদি তেমন করে মরতে পারতেন তাঁরা, তবে আমরাও তাঁদের পদাঙ্ক অনুসরণ করতে পারতাম। আচ্ছা অমন করে আমার দিকে চাসনে চিত্ত, আমি তোর ঠাকুরদাকে গাল দিচ্ছি নে। স্বয়ং রবিঠাকুর একথা লিখেছেন।

চিত্ত

চলো কোথায় মরতে যাব, নিয়ে চল। এই বিষ পাঁচনের চেয়ে ইংরেজদের গুলিই ভালো। আহ, যতীনদা, কাঁধে উঠব না, আমি কি বাচ্চা ছেলে?

যতীন

তোর ঘাড়ে দেশের কাজ, আর আমার ঘাড়ে তুই। চল, কনেবউয়ের মত লজ্জা করিসনে। আলো ফুটবার আগেই বুড়িবালামের তীরে পৌঁছতে হবে। চল চল।

টেগার্ট

রডা কোম্পানির দশ বাক্স মাউজার পিস্তল কার্তুজসমেত ডাকাতি হয়ে যাবার পর আমরা বুঝতে পারলাম দে আর প্ল্যানিং সামথিং বিগ। গোটা লালবাজার তখন অন হাই অ্যালার্ট। এদিকে বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। একের পর এক চরের থেকে খবর আসছে জার্মানি অস্ত্র শস্ত্র দিয়ে ইণ্ডিয়ার টেররিস্টদের সাহায্য করতে চায়। পোর্টগুলোতে শুরু হল কড়া নজরদারি। এরমধ্যে আমাদের ডাবল এজেন্ট পাকা খবর পাঠাল জার্মান জাহাজ অ্যামিউনিশন নিয়ে আসছে বেঙ্গলে। ব্যাঙ্কক থেকে নিয়মিত খবর আসে খোদ কলকাতার একটা স্বদেশী দোকান হ্যারি আব্দ কোম্পানিতে। পোর্টগুলো সব ব্লক করে আমি আর লোম্যান ফোর্স নিয়ে ভোররাতে দোকানটা রেড করলাম। প্রমাণ ছিল এদিক ওদিক, কিন্তু সবচেয়ে বড় ক্লু ছিল যত্ন করে খামে মোড়া একটা হান্ড্রেড রুপি নোট। নম্বর মিলিয়ে দেখলাম বালাসোরের ইউনিভার্সাল এমপোরিয়ামে। বড়বাবুর মাইনেয় ছিল ঐ এক নোট। আর দেরী করিনি। ডিআইজি ডেনহ্যামকে নিয়ে রওনা হলাম বালাসোর। এমপোরিয়ামে চিরুনী তল্লাশি চালিয়ে বড়বাবুর ঘরের ওয়েস্ট পেপার বাস্কেট থেকে পেলাম একটা চিরকুট। তাতে লেখা - কাপ্তিপদা

ম্যাজিস্ট্রেট কিলবিকে দিয়ে তিনশ সৈন্য, গোলা, বারুদ নিয়ে আমরা রওনা হয়ে গেলাম কাপ্তিপদা। শুনলাম এক সুদর্শন যুবক সাধু ইদানীং ঘাঁটি গেড়েছে। বাঘা যতীনের চামড়া সাদা হলে ইয়োরোপের থিয়েটার সোসাইটিতে তাকে নিয়ে টানাটানি পড়ে যেত, গ্রীক গডের মত তার দেহ। এই প্যাংলা নেটিভদের মধ্যে সহজেই চেনা যায়।

বাহিনী নিয়ে সেই সাধুর আস্তানায় আমরা যখন পৌঁছলাম, পাখি উড়ে গেছে।

আমি জানতাম মুখার্জিকে সহজে ধরা যাবে না। লোকটা কৌশল জানত - হি ওয়াস আ ফার্স্ট ক্লাস স্ট্রাটেজিস্ট। আমি পাল্টা চাল দিলাম। চারদিকের গ্রামে খবর ছড়িয়ে দিলাম বাঙালি ডাকাতদল এখানে লুকিয়ে আছে, ধরতে পারলে মাথাপিছু দুশো টাকা ইনাম। হাহাহা, এই দেশে ইনামের খবর হাওয়ার আগে ছোটে। শিগগিরই জানতে পারলাম বুড়িবালামের দিকে পাঁচটা বাইরের লোককে দেখা গেছে। তাদের পিছু নিয়েছে লোকাল থানার দারোগা নিজে।

পরবর্তী অংশ শুনুন ইউটিউবে

তথ্যসূত্র

বই

  1. মণি বাগচী. বাঘা যতীন
  2. শৈলেশ দে. আমি সুভাষ বলছি
  3. Michael Silvestri. Policing “Bengali Terrorism” in India and the World: Imperial Intelligence and Revolutionary Nationalism, 1905–1939

আপনার মতামত

এর উত্তরে Some User

এই বিভাগের অন্যান্য পোস্টসমূহ

  • শরতের খোলা খাম ব্যানার

    শরতের খোলা খাম

    সিরিজ: গল্প-গাছা | নাট্যরূপ: তৃণা চক্রবর্তী, পারমিতা বন্দ্যোপাধ্যায়
    প্রকাশিত: 10 অক্টোবার 2021 | সময়কাল: 59 মিনিট 32 সেকেন্ড

    সাদিক হোসেন, সাকিন মুর্শিদাবাদ

    অনামিকা মিত্র, সাকিন উত্তর কলকাতা

    রাজযোটক যে নয় সাদিক-অনামিকা তা জানতে কোষ্ঠীবিচার লাগবে না। দুর্গ্রহলগ্নে ওদের জন্ম। তাই তো নেট পরীক্ষা দিতে গিয়ে পাশাপাশি সিট পড়ে। সময় বুঝে কালি খতম হয়ে যায় সাদিকের। ঝট করে পেন বাড়িয়ে দেয় পাশ থেকে অচেনা অনামিকা। ডটপেনের মূল্যবাবদ পরীক্ষার পরের চা আর প্রজাপতি বিস্কুটটা অফার করে সাদিক। তারপর? অনামিকার গালে টোল পড়ে, সাদিকের গিটারে বোল ধরে, কাশফুলে লাগে দোল। যা হবার তাই হয়। অথচ তখন সদ্য নয়ের দশক। বাবরি মসজিদ অক্ষত। ভাবা যায়?

    সাদিক অনামিকার প্রেমটা বেশিদিন টেকেনি। কিন্তু টেঁকসই প্রেম ঠিক কেমন? এই যে প্রতি পুজোয় এরা এখনও একজন আরেকজনকে মনে করে চিঠি লেখে, লিখে সে চিঠি রেখে দেয় যার যার ডায়রিতে, এটা প্রেম, না অন্য কিছু? এই চিঠি আর কিছু গান কবিতা নিয়ে শ্রুতিনাটক শরতের খোলা খাম। কিছু চিঠি থাকল এখানে আপনাদের জন্য।

  • শ্রুতি নাটক - বিদূষক

    বিদূষক

    এডগার অ্যালান পোয়ের ছোটগল্প হপ-ফ্রগ অবলম্বনে শ্রুতিনাটক
    সিরিজ: গা ছমছম | নাট্যরূপ: পারমিতা বন্দ্যোপাধ্যায়
    প্রকাশিত: 31 অক্টোবার 2021 | সময়কাল: 26 মিনিট 25 সেকেন্ড

    এডগার অ্যালান পো “Hop-Frog” নামে একটি ছোটগল্প লিখেছিলেন, যা প্রথম প্রকাশিত হয় ১৮৪৯ সালে। Hop-Frog নামের এক বামন ও বিকলাঙ্গ ব্যক্তি রাজার বিদূষক। তার একমাত্র বন্ধু ছিল ট্রিপেটা নামের এক বামন মেয়ে।রাজা ও তার সাত মন্ত্রী ছিল নিষ্ঠুর ও নৃশংস;  Hop-Frog-কে নিয়মিত অপমান করে, জোর করে মদ খাইয়ে মজা লুটত। এক বিশেষ ভোজসভায় Hop-Frog প্রতিশোধ নেওয়ার সুযোগ খুঁজে পায়।

    হপফ্রগ গল্প হরর, রিভেঞ্জ যত ততটাই মেটাফরিক। রাজা আর তার সাত মন্ত্রীর কাণ্ড দেখে মনে হয়, এরা আদৌ আটটা আলাদা লোক না একই ইউনিট? একটাই রাষ্ট্র, একটাই দফতর, একটাই কুর্সি, সেইরকম না তো? ফ্যাসিজম তো অনেকটা ঐ রাজার মতন, ক্ষমতার মদে দিশেহারা হয়ে যাকে তাকে কামড়ে দেয়। তো কে পারে তার শোধ তুলতে? কী হয় শোধ তোলার পরে? কেমন হয় যদি এই বিন্দুগুলো ঘুরে যায়? পাওয়ার স্ট্রাকচারে যে যেখানে সে সেভাবে তার স্বৈরাচার চালিয়ে যায়, যতক্ষণ তার মেয়াদ। সিংহাসন তার কাজ করে যায়। এইটুকুই?

    এই উত্তরগুলো খুঁজেছি আমরা এই গল্পের অনুপ্রেরণায় লিখিত শ্রুতিনাটক বিদূষকে। এখানে নাটকের অংশবিশেষ রইল সংলাপ আকারে।

  • Ajeeb Dastaan - বাঈজীদের গল্প

    Ajeeb Dastaan - বাঈজীদের গল্প

    সিরিজ: ইতিহাস কথা কয় | নাট্যরূপ: পারমিতা বন্দ্যোপাধ্যায়
    প্রকাশিত: 06 মার্চ 2022 | সময়কাল: 26 মিনিট 41 সেকেন্ড
    প্রাপ্ত-বয়স্কদের জন্য

    বিস্মৃত যুগের নগরবধূ থেকে মহারাণী ভিক্টোরিয়ার ইন্ডিয়ান উপনিবেশের বাঈজীদের ব্যাপ্তিতে আমরা খুঁজতে চেয়েছি নটীদের সামাজিক অবস্থানের বিবর্তনের ইতিহাস। এই শ্রুতিনাটক কাল্পনিক হলেও যে ইতিহাসের গল্প আমরা বলেছি তা আমাদের উপনিবেশের অমোঘ সত্য।

  • টেগার্টের ডায়েরি চ্যাপ্টার ২ - ননীবালা দেবী

    টেগার্টের ডায়েরি চ্যাপ্টার ২

    ননীবালা দেবী

    সিরিজ: ইতিহাস কথা কয় | নাট্যরূপ: পারমিতা বন্দ্যোপাধ্যায়
    প্রকাশিত: 10 আগস্ট 2022 | সময়কাল: 16 মিনিট 9 সেকেন্ড

    আমাদের এই চ্যাপ্টারে আছেন এক ব্ল্যাক উইডো। তিনি হলেন ননীবালা দেবী। ননীবালা দেবী। বাংলার প্রথম মহিলা রাজবন্দী। অফিসিয়ালি প্রথম থার্ড ডিগ্রী খাওয়া মহিলা রাজবন্দী ননীবালা দেবী। শরীরে দুবাটি লঙ্কাবাটা ঢোকানোর পরেও মুখ না খোলা ননীবালা দেবী।

    টেগার্টের ডায়রীর দ্বিতীয় পর্ব, নির্মিত হয়েছে বাংলার প্রথম মহিলা রাজবন্দী ননীবালা দেবীর ওপরে। শ্রুতিনাটকের কিছু সংলাপ এখানে রইল।

  • বিষকন্যা

    বিষকন্যা

    সিরিজ: ইতিহাস কথা কয় | নাট্যরূপ: পারমিতা বন্দ্যোপাধ্যায়
    প্রকাশিত: 05 নভেম্বর 2022 | সময়কাল: 1 ঘন্টা 30 মিনিট 21 সেকেন্ড

    প্রাচীন ভারতীয় রাজনীতির এক অমোঘ দৈব অস্ত্র বিষকন্যা। এক অপরূপা মোহিনী নারী - যে পুরুষ তাঁকে কামনা করে তার সর্বনাশ হয়। সে রাজাই হোক বা অমাত্য। কোনো বাস্তব প্রমাণ নেই এমন অস্তিত্বের, তবু কল্পকাহিনীতে এই নিয়ে কত গল্প হয়েছে তার লেখাজোখা নেই। যেমন, শরদিন্দু বন্দোপাধ্যায়ের প্রবল জনপ্রিয় ঐতিহাসিক কাহিনী বিষকন্যা। ষোড়শ মহাজনপদের এই কাহিনীর আর একটি চিত্রনাট্যরূপ উপন্যাস তিনি লিখেছেন - “বহু যুগের ওপার হতে”।

    আমাদের এই শ্রুতিনাটক এই দুইটি কাহিনীর ছায়া অবলম্বনে নির্মিত। নাটকের প্রেম প্রতিশোধের ট্র্যাক অক্ষুণ্ণ রেখে আমরা উল্কাকে সামান্য বেশি অধিকার দেবার চেষ্টা করেছি। রতিক্রীড়ায় পারদর্শিতাকে ছাপিয়ে রাজনীতির সিদ্ধান্তের অধিকার, তাও পিতৃতান্ত্রিক সিস্টেমের মধ্যে, সেসব চাইলে এক বিষকন্যাকে কতটা কী পেতে হয় এইটুকুই আমাদের খোঁজ এই নাটকে। সংলাপের অংশবিশেষ এখানে থাকল।

  • তিহার থেকে বলছি

    তিহার থেকে বলছি

    সিরিজ: গল্প-গাছা | নাট্যরূপ: পারমিতা বন্দ্যোপাধ্যায়
    প্রকাশিত: 08 মে 2022 | সময়কাল: 1 ঘন্টা 27 মিনিট 25 সেকেন্ড

    শ্রুতিনাটক তিহার থেকে বলছি রবিপ্রেমের ফসল। রবীন্দ্রনাথের তিনটি উপন্যাস শেষের কবিতা, ঘরে বাইরে এবং চতুরঙ্গের কিছু অংশ এক কাল্পনিক চরিত্র আসিফার দৃষ্টিতে পাঠ করব আমরা। আসিফা এক রাজবন্দী। লাবণ্য, বিমলা, দামিনীর অন্বেষণে তার জীবনের শেষ মুহূর্ত মিশে যায়।

    রাজবন্দী আসিফার মোট তিনটি উপাখ্যান আছে, তিহার থেকে বলছি তার প্রথম কিস্তি। নাটকের মৌলিক অংশটি রইল।

  • মধুর বসন্ত - গীতি-কবিতা আলেখ্য

    মধুর বসন্ত - গীতি-কবিতা আলেখ্য

    সিরিজ: গল্প-গাছা | রচনা: পারমিতা বন্দ্যোপাধ্যায়
    প্রকাশিত: 13 মার্চ 2022 | সময়কাল: 34 মিনিট 32 সেকেন্ড

    মাধবী পাহাড় ডিঙিয়ে বেড়ায়। পূজা অ্যাম্বুলেন্স চালায়। রেশমী স্টান্টলেডি ছিল, এখন চোট পেয়ে বসে গিয়ে ক্লাউড কিচেন চালায়। মনোদিদি সমাজের ভ্যালিডেশনের উল্টোদিকে থাকে, লোকে যাকে বলে পাগল। মনোদিদি মন ভালো করতে কবিতা পড়ে। মালতী বেকার মানুষ, মাধবীর জন্য সমাজ-বিরুদ্ধ সমপ্রেম নিয়ে বসে থাকে। শ্যামলী গিগ কর্মী, অ্যাসিড এটাক ভিক্টিম থেকে সার্ভাইভার হবার লড়াই করে যায়। শতভিষা এয়ারফোর্সে আছে, যুদ্ধ বিধ্বস্ত ইউক্রেন থেকে ভারতীয়দের ফেরাতে গিয়ে কোনো এক মাধবীর সন্ধান পায় সে। এই মেয়েদের বসন্ত যাপনের গল্প যা কিনা শ্রেণিভেদে সমান্তরাল হবার কথা ছিলো তা মিলে যায় কোনও অপ্রত্যাশিত প্রতিচ্ছেদে। এই নিয়ে গীতি-কবিতা আলেখ্য মধুর বসন্ত, সেই সমস্ত মেয়েদের জন্য, যে যেখানে লড়ে যায় আমাদেরই লড়া। কথনের কিছু অংশ রইল এখানে।

  • গঙ্গাহৃদিপদ্মে

    গঙ্গাহৃদিপদ্মে

    সিরিজ: ইতিহাস কথা কয় | নাট্যরূপ: পারমিতা বন্দ্যোপাধ্যায়
    প্রকাশিত: 23 এপ্রিল 2023 | সময়কাল: 1 ঘন্টা 20 মিনিট 31 সেকেন্ড

    "দেবদাসী সুতনুকা রূপদক্ষ দেবদিন্নকে কামনা করিয়াছিল"

    সম্ভবত পৃথিবীর প্রাচীনতম প্রেমপত্র - ছত্তিসগড়ের যোগমারি গুহায় খোদিত হয়ে আছে আনুমানিক খ্রীষ্টপূর্ব তৃতীয় শতক থেকে। কে সুতনুকা কে দেবদিন্ন, কোথা থেকে এসেছিল তারা, পালিভাষায় সত্যিই কী বলতে চেয়েছিল, ইতিহাস তা জানে না।

    কেমন হয় যদি সুতনুকা আর দেবদিন্নের আদি সাকিন হয় আসলে বাংলাভূমি? কৈবর্ত, শূদ্রদের সে রাজত্ব বলকা দেবী, গঙ্গামায়ের দিব্যি দিয়ে বাইরের শত্তুরদের খেদিয়ে এসেছে এতদিন। তাদের বল্লমের নিশানা দেখে তফাত হয়েছেন আলেকজান্দার স্বয়ং। তাদের সোনার বাংলায় বাণিজ্যে ফসলে সমৃদ্ধিতে জ্বলজ্বল করছে চন্দ্রকেতুগড়। হয়ত এই আলেকজান্ডারের গঙ্গাহৃদি?

    এই সব সারেগামা এসে কোথাও মিলবে আমাদেরই সামনে যোগশিরা গুহায়। সুতনুকা আর দেবদিন্নের ভালোবাসার শেষ অঙ্কে। গঙ্গাহৃদিপদ্মে।