ভাষ্য
Friends! My comrades in the War of Liberation! Today I demand of you one thing, above all. I demand of you blood It is blood alone that can avenge the blood that the enemy has spilt. It is blood alone that can pay the price of freedom. Give me blood and I promise you freedom!
নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোস যখন আজাদ হিন্দ ফৌজের সামনে রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতার অমর দাবি রাখছেন, তখন কি তিনি জানতেন আসন্ন বর্ষায় কোহিমার জঙ্গলের ঘাস আর বুনো ফুল খেয়ে ক্ষুন্নিবৃত্তি করেও দাঁতে দাঁত চেপে স্বাধীনতার যুদ্ধ করবে এই আজাদ হিন্দ ফৌজ?
স্বাধীনতার স্বাদ কেমন? জানতে আজ আমরা এসেছি যুদ্ধের আঙিনায়। কথায় বলে যুদ্ধ যারা চায় তারা যুদ্ধে যায় না। যুদ্ধে যারা যায়, তারা যুদ্ধ চায় না। সুন জু বলেছিলেন রক্তক্ষয় না করে শত্রুকে দমন করাই সর্বশ্রেষ্ঠ রণনীতি।এদিকে রক্ত না ঝরলে ইতিহাসের মোড়ও যে ঘোরে না? একটা পলাশীর যুদ্ধ ছাড়া কেমন করে বাংলার স্বাধীনতার সূর্য পাটে বসত? একটা বিশ্বযুদ্ধ ছাড়া কেমন করে বিদেশি শাসকের সীমাহীন লোভ আর লাভের সাম্রাজ্য অস্ত যেত? মধ্যরাতের স্বাধীনতা পঞ্চাশ লক্ষ বাঙালির খিদে নিংড়ে যে মন্বন্তর যে দেশভাগ পেরিয়ে এসেছিল, তার স্বাদের খোঁজ কোথায় পাব আমরা?
কেন? সে স্বাদের কথা কিছু লেখা ইতিহাসে? আর যা কিছু ইচ্ছায় অনিচ্ছায় বাদ রয়ে গিয়েছে, তা গান ছড়া হয়ে থেকে গিয়েছে লোককবির কণ্ঠে, মানুষের মুখে মুখে। নইলে ধরো না কেন, বিলিতি পণ্ডিত হেস্টিংস সায়েব যে পেটের দায়ে প্রাণের দায়ে পচা পান্তা খেয়ে পিত্তি নিবারণ করেছিল, কৃষ্ণকান্ত ভাদুড়ী মশাই লিখে না রাখলে সে কথা কি কারোর মনে থাকত?
কথিত আছে সিরাজের কোপ থেকে বাঁচতে হেষ্টিংস্ সায়েব কাশিমবাজারে কৃষ্ণকান্ত নন্দীর ( কান্তবাবু ) বাড়িতে গা ঢাকা দিয়েছিলেন। তখনও কোম্পানির শাসন কায়েম হয়নি, তাই দিওয়ানের চাকরি নিয়ে সমাজের কেষ্ট বিষ্টু মশাইদের আসতে তখনও খানিক দেরি আছে। নবাব হেস্টিংসের মুন্ডু নিতে বাড়ি বাড়ি তল্লাশি চালাচ্ছেন। চাট্টি মুরগি মটন ডিনার আয়োজন করলে নবাবের পেয়াদা এসে ক্যাক করে চেপে ধরবেন না? অগত্যা খিদের জ্বালায় নেতিয়ে পড়া বিলিতি সায়েবকে দিশি খাবার দেওয়া ছাড়া আর গতি কি?
নবাবের ভয়ে কান্ত নিজের ভবনে
সাহেবকে রেখে দেয় পরম গোপনে |
সিরাজের লোকে তাঁর করিল সন্ধান,
দেখিতে না পেয়ে শেষ করিল প্রস্থান |
মুস্কিলে পড়িয়ে কান্ত করে হায় হায়,
হেষ্টিংসে কি খেতে দিয়া প্রাণ রাখা যায় ?
ঘরে ছিল পান্তাভাত, আর চিংড়ি মাছ
কাঁচা লঙ্কা, বড়ি পোড়া, কাছে কলাগাছ |
কাটিয়া আনিল শীঘ্র কান্ত কলাপাত,
বিরাজ করিল তাহে পচা পান্তা ভাত |
পেটের জ্বালায় হায় হেষ্টিংস তখন
চব্য চুষ্য লেহ্য পেয় করেন ভোজন |
সূর্য্যোদয় হল আজ পশ্চিম গগনে,
হেষ্টিংস্ ডিনার খান কান্তের ভবনে |
ওয়ারেন হেস্টিংস সেই পচা পান্তার স্বাদ মনে হয় ভুলতে পারেননি। নয়ত পাশা পাল্টানোর পরেই সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা বঙ্গভূমি শ্মশান হয়ে যায় এই হেস্টিংসের রাজত্বে? ছিয়াত্তরের মন্বন্তর। যুদ্ধের মূল্য যে যেভাবে দেয়, দিতে হয়! পলাশীর আমবাগানে মোহনলালের কামানের দাপটে হারতে হারতেও শেষ অবধি মীর জাফর জগৎ শেঠের দয়ায় বাজি মেরে বেরিয়ে গেল ক্লাইভ, বঙ্গদেশে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি দিওয়ান হয়ে খাজনার দেখভাল করতে ঢুকেই পড়ল। নামেই দিওয়ান, কাজে কর্মে রাজারও ওপরে। জমির কর, বাজারের দর ঠিক করবে কোম্পানি। বলাই বাহুল্য সেখানে ব্যবসার মুনাফাই আসল বস্তু। কৃষিপ্রধান দেশে ক্রান্তীয় জলবায়ু, আজ থেকে তিনশো বছর আগে যখন বিদ্যুৎ, স্যাটেলাইট, ফোন, ট্র্যাক্টর সব রূপকথা, তখন ফলন ভালো না হলে, অনাবৃষ্টি খরা হলে রাজা, নবাব রাজস্ব মকুব করতেন। কারণ তাঁদের প্রজা পালনের দায় ছিলো, এই দেশে বাঁচা এ দেশেই মরার ভবিতব্য ছিলো। কোম্পানির আমলে রাতারাতি সে ধারা গেল পাল্টে।
তাই বলে এত প্রাচীন কৃষিজীবী জনপদ সত্যিই কি রাতারাতি মন্বন্তরে উজাড় হয়ে যেতে পারে? তিন বছর ধরে আকাল চলছে যেখানে কোন অর্থশাস্ত্র মতে সেখান থেকে ত্রাণ, ভর্তুকি কিচ্ছুটি না দিয়ে জবরদস্তি ট্যাক্স আদায় করা যায়? কোম্পানির সেনা থেকে সিন্দুক সব দুধে ভাতে রাখার জন্য বাংলা বিহার ওড়িশার তিনভাগের এক ভাগ মানুষ না খেতে পেয়ে মরে যান, তবেই না মন্বন্তর হয়?
পলাশীর যুদ্ধে অভাবনীয় জয়ের পর ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ভাবখানা হলো এলোমেলো করে দে মা লুটেপুটে খাই। বেলাগাম ট্যাক্স আর পাল্লা দিয়ে তহবিল তছরুপ হয়ে গেল নিয়ম। এদিকে আকালের দুর্দিনে সাপ্লাই ডিমান্ডের মৌলিক অঙ্কে বাজারমূল্য যখন কমানোর কথা, বাজার থেকে চাষিদের আগাম বীজ কেনার টাকা ধার দেবার কথা তখন হবে ঠিক তার উল্টো। খরা অজন্মা দেখে মহাজনেরা অ্যাডভান্স দেওয়াই বন্ধ করে দিল। তাদেরও ঘটি ডোবে ডোবে। জমির ট্যাক্স আজ একশো তো কাল দুশো, মহাজনকে নিজের ধানের গোলাটি তো আগে বাঁচাতে হচ্ছে?
কোম্পানি কি কিছুই বোঝে নি? তা কি করে হয়?
একেবারেই যে বোঝেনি তা ঠিক নয়! ঢাকার নবাব বার বার জরুরি আর্জি জানানোর পর কোম্পানির লোক সরেজমিনে তদন্ত করে এসে রিপোর্ট করল, বাংলার মানুষ যে শুধু ভালো আছে তাই না, দুশো মজায় আছে। গ্রামে গ্রামে গরুর দুধ ফ্রি পাওয়া যায় নয়ত? হেস্টিংস সায়েব খেদিয়েই দিল নবাবকে, ফালতু তামাশা হুজ্জুতি যত! তবে অমনি কিছু না হলেও এদিক ওদিক যুদ্ধ লেগেই আছে, হায়দরাবাদের সুলতানকে এমনি এমনি তো পেড়ে ফেলা যায় না? সত্যি সত্যি দুর্ভিক্ষ হলে সেনা বাহিনী খাবে কী? বুদ্ধি করে বারো লক্ষ মন ধান কিনে মজুত করে ফেলল কোম্পানি। সাধে কি হেস্টিংস একজন পণ্ডিত মানুষ? গ্রামে গরুর দুধ ফ্রিতে পাওয়া যাচ্ছে মানে সে গ্রামে দুধ কিনে খাবার মতো শিশু যে আর নেই, শেষ মূলধন নিজের বুকের শিশুকে বাজারে বিকিয়ে দিয়েছে অভাগী মা, না খেতে পেয়ে মরিয়া ভুখা মানুষ শেষে মানুষ মেরে খাচ্ছে, এতটা বোঝার এলেম লর্ড ওয়ারেন হেস্টিংসের ছিলো না বললে হয়ত ইতিহাস ক্ষমা করবে না।
ছিয়াত্তরের মন্বন্তর থেকে আকালের শুরু। এর পর দফায় দফায় দুর্ভিক্ষে উজাড় হয়ে গিয়েছে মাড্রাস্, আগ্রা, দিল্লি, ওড়িশা, বিহার, দাক্ষিণাত্য, বম্বে। ১৭৭০ থেকে ১৯০০ সাল অবধি পরাধীন ভারতে পরের পর দুর্ভিক্ষে না খেতে পেয়ে মারা যান আড়াই কোটির বেশি মানুষ। এই দীর্ঘ সময়ে সারা পৃথিবী জুড়ে যত যুদ্ধ হয়েছে তাতে সরাসরি নিহত হয়েছেন এর পাঁচ ভাগের এক ভাগ সেনা। পরাধীন দেশের প্রাণ বুঝি এতই সস্তা!
কি আশ্চর্য দেখুন, ছিয়াত্তরের মন্বন্তরের ঠিক একশো তিয়াত্তর বছর পর। সেই সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা বাংলা ফের উজাড় হয়ে যাবে দুর্ভিক্ষে। আধুনিক ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়ানক মন্বন্তর, এবার কোন যুদ্ধের খোরাকি জোগান দেবার ফল? যা কিনা বলি নিয়ে যাবে পঞ্চাশ লাখ বাঙালির প্রাণ! এ উত্তর তো সবার জানা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ।
জানা কথাগুলোই আমরা একটু বুঝে নেবার চেষ্টা করি না হয়। পৃথিবীর ফুড হ্যাবিট আর কালচার বরাবরের মতন পাল্টে দেবার মোড় এই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে আমরা যেমন যেমন দেখেছি তেমন আর কোথাও দেখা শোনা যায় না। এই যুদ্ধের এক এক বছর চিহ্নিত হয়ে আছে এক এক জনপ্রিয় খাবারের আবিষ্কার দিয়ে। এই যেমন ধরুন ১৯৪৪ মানে হলো ফ্রোজেন ডিনারের বছর। আমেরিকার নেভি আটলান্টিক সাগরে যখন টহল দেবে তখন ডিনার নিয়ে মাথা ঘামানোর আর ঝামেলা নেই। এর এক দশকের মধ্যে টেলিভিশন আসার পরে হইহই করে ফ্রোজেন ডিনার হয়ে উঠবে আমেরিকার ঘর ঘর কি কাহানি। ১৯৪২ মানে ব্রুকলিন ব্ল্যাকআউট কেক। বিখ্যাত চকলেট পুডিং, এর রেসিপি এসেছিল নাকি ব্রুকলিনে জাপানি আক্রমণ থেকে বাঁচতে জরুরি ব্ল্যাকআউটের সময়।
কি রোমান্টিক, তাই না? যারা যুদ্ধে জিতে যায় তারা বুঝি এভাবেই সময়টাকে ধরে রাখে তাদের যাপনে, রসনায়?
তাই কি? আচ্ছা, এই যে মিত্রশক্তি বিশ্বযুদ্ধ জিতে গেল, এই বিজয়ী পক্ষে তো ব্রিটেন শাসিত ভারতও ছিলো। বাংলার ক্ষেত থেকে লাখ লাখ মন চাল অন্ন জুগিয়েছিল মিত্রশক্তির সৈন্যকে। তাহলে ১৯৪৩ বলতে আমরা কেন কালোনুনিয়া চালের পায়েস কিংবা ভাপা পিঠে মনে রাখতে পারি না? কেন ১৯৪৩ যা কিনা ১৩৫০ বঙ্গাব্দ, তাই বলতে আমরা বুঝি জীবন্ত কঙ্কালের স্তূপ বুকে করে বসে থাকা পঞ্চাশের মন্বন্তর? পণ্ডিতেরা অনেক কারণ দেন অবশ্যই। যেমন বার্মা জাপানের অধিকারে চলে যাবার পর বাংলায় বার্মার ধান আমদানি পুরো বন্ধ হয়ে যায়, কাজেই দোষটা জাপানের।
এই এক মিনিট। বাংলায় ধান আমদানি হত? এই এত বড় বেঙ্গল প্রভিন্স, এখানেই তো ধান চাষ হত! আমদানি করার কি দরকার ছিলো আবার?
বাংলার ক্ষেতে যে ধান ফলতো সেসব বিদেশি গভর্নমেন্টের পেটে চালান করার পর পরে খুদ কুড়ো পড়ে থাকত। তার ওপরে ১৯৪২ সালে বাংলায় আমন ধানের ফলন মুখ থুবড়ে পড়ে। এদিকে মজুত ধান তলানিতে। এমন সময় বার্মা জাপানের কবজায় চলে যাবার পর গোটা উপকূল জুড়ে ব্রিটিশ সরকার ব্যাপক ধর পাকড় শুরু করল। চালের নৌকা দেখলেই ছিনিয়ে সোজা মিলিটারি পাহারায়। শত্রুকে চালের হদিশ দেওয়া যাবে না। শত্রু কি শুধু দেশের বাইরে? ইংরেজ ভারত ছাড়ো, জয় হিন্দ, করেঙ্গে ইয়া মরেঙ্গে স্লোগান দিচ্ছে কারা? তাদের মাটির, তাদের শ্রমের ফসল যতই ব্রিটেনকে যুদ্ধে জিতিয়ে দিক, তাই বলে পরাধীন দেশের মানুষকে ভালোবেসে ফেললে তো কেলেঙ্কারী! মন্বন্তরের প্রসঙ্গ উঠলে শিউরে উঠে উইনস্টন চার্চিলকে বলতেই হবে ভারতীয়রা খরগোশের মতন বাচ্চা পয়দা করে, সেই জন্যেই এই দুর্দশা। মাসুম নাদান ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ সেখানে কিই বা করতে পারত?
আমেরিকা থেকে প্রস্তাব এসেছিল অনাহারে মরতে থাকা বাংলায় ত্রাণ পাঠানো যাক। চার্চিল ফের শিউরে উঠে তৎক্ষণাৎ সে প্রস্তাব নাকচ করল। বাড়তি খাবার থাকলে মিত্রশক্তির সেনা সেসব পাবে, আমেরিকা বরং খাবার মজুত করুক। বাকি পঞ্চাশ লাখ বাঙালির হিসেব? ওইটুকু কোল্যাটারাল ড্যামেজ বা থাকলে কি আর বিশ্বযুদ্ধ হলো? তাছাড়া ব্রিটিশ সিংহের ইমেজের একটা ব্যাপার আছে তো নাকি? ওরকম হাত পেতে কলোনির খোরাক ভিক্ষা নেওয়াটা স্ট্যাটাসের জন্যেও তো ঠিক না কিনা?
বাংলায় ত্রাণ পাঠানোর প্রস্তাব শুধু আমেরিকা থেকেই আসেনি কিন্তু। সিঙ্গাপুর থেকে একজন সেনানায়ক সরাসরি আজাদ হিন্দ রেডিও তে প্রস্তাব রাখলেন, তিনি এক লক্ষ মন চাল পাঠাবেন বাংলায়। শর্ত একটাই, জাহাজগুলোকে অক্ষত অবস্থায় ফিরতে দিতে হবে।
বলাই বাহুল্য ব্রিটিশ সরকার তাদের পয়লা নম্বর দুশমনের এই আর্জিতে কান দেবার দরকার মনে করে নি। হয়ত তারা ভেবেছিল খেতে পেলে এই ত্যাদড় বাঙালিগুলো শুতে তো আর চাইবে না বরং গিয়ে সুভাষ বোসের ফৌজে যোগ দেবে। যে নেতাজির এক দিল্লি চলো হুঙ্কারে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার প্রবাসী ভারতীয়রা হাতে অস্ত্র তুলে নিয়েছেন, যে সুভাষ বোসের হাতে আজীবনের সঞ্চয় দিয়ে গড়া আজাদ হিন্দ ফৌজ তুলে দিয়েছেন রাসবিহারী বসু, তিনি বাংলার অন্নদাতা হয়ে উঠলে তো ব্রিটিশ সিংহের বিলক্ষণ বিপদ!
ব্রিটিশরাজের এই স্বরূপটি জানতেন বলেই নরম পথে স্বাধীনতা আসার কোনও আশা করেননি সশস্ত্র বিপ্লবীরা। শাসকের দয়া ভিক্ষা করেননি নেতাজি, বা তাঁর পূর্বসূরী - রাসবিহারী বসু।
আসলে আজাদ হিন্দ ফৌজের মূল কাণ্ডারী রাসবিহারী বসু মন্বন্তর আর মহামারীর মধ্যে বড় হয়েছিলেন তো? ব্রিটিশ শাসনের হিংস্র রূপ খুব কাছ থেকে দেখেছেন। তাই দেশ থেকে বিদেশ - আজীবন ব্রিটিশ সাম্রাজ্যকে ভারতের মাটি থেকে উপড়ে ফেলার জন্য লড়ে গিয়েছেন।
অনুশীলন সমিতির যে গুটিকতক সদস্য আলিপুর বোমা মামলার পরেও অধরা ছিলেন রাসবিহারী বসু তাঁদের অন্যতম। আর্য সমাজ এবং যুগান্তর সমিতির পাঞ্জাব শাখার সঙ্গে কাজ করতে দেরাদুনে চাকরি নেন রাসবিহারী বসু। নদীয়ার বসন্ত কুমার বিশ্বাসকে নিয়ে তৈরি করেন ভাইসরয় লর্ড হার্ডিঞ্জ হত্যার ব্লু প্রিন্ট।
২৩ ডিসেম্বর, ১৯১২। দিল্লিতে রাজধানী সরিয়ে আনার মোচ্ছবের দিন। হাতির পিঠে চেপে চাঁদনি চৌকে ঢুকছে ভাইসরয় হার্ডিঞ্জ। দিল্লির হাভেলিগুলোর ছাদে ভর্তি ভিড়। শাড়ি পরে লক্ষ্মীবাই নাম নিয়ে মেয়েদের ভিড়ে মিশে রইলেন বসন্ত কুমার বিশ্বাস। রাসবিহারী বসু নিজেও রইলেন তামাশা দেখার ভিড়ে। হাতি নাগালের মধ্যে আসতেই অনুশীলন সমিতির বোমা পড়ল ভাইসরয়ের ঠিক পেছনে। ভাইসরয়ের ছত্রধর বোমায় উড়ে গেলেন, গুরুতর জখম হলো লর্ড হার্ডিঞ্জ। লেডি হার্ডিঞ্জ, মাহুত আর হাতি রইল অক্ষত। তীব্র গোলমালে অকুস্থল থেকে সঙ্গী বসন্ত কুমার বিশ্বাসকে নিয়ে রাসবিহারী বসু শুধু যে অক্ষত কেটে পড়লেন তাই নয়, ঘটনার তীব্র নিন্দা করে দেরাদুন, নিজের কর্মস্থলে পরের দিন ধিক্কার সভাও ডাকলেন। শাম দাম দণ্ড ভেদ - স্বাধীনতার স্বাদের জন্য যতদূর যাওয়া যায়! প্রায় বছর দুয়েক বাদে বাবাকে দাহ করতে এসে পুলিশের হাতে ধরা পড়বেন বসন্ত বিশ্বাস, পাবেন মৃত্যুদণ্ড। কিন্তু রাসবিহারী? পুলিশ কর্তাদের সঙ্গে তাঁর এমন দহরম মহরম, অনেকে ভাবতেন তিনি পুলিশের স্পাই।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধে যখন গোটা পৃথিবী নড়ে চড়ে বসছে, আশায় বুক বাঁধলেন রাসবিহারী বসু, লালা হর দয়াল, গদর পার্টি। ইন্দো-জার্মান পরিকল্পনায় স্থির হলো যেহেতু ব্রিটিশ শাসিত ভারতে ব্রিটিশ সেনার সিংহ ভাগ এখন দেশের বাইরে, সামরিক অভ্যুত্থান হওয়ার আদর্শ সময়। আমেরিকা থেকে অস্ত্র বোঝাই করে জাহাজ নিয়ে আসবেন গদর বিপ্লবীরা। জার্মান ডিপ স্টেটের সঙ্গে আইরিশ রিপাবলিকান, চেক বিপ্লবীরাও বিভিন্ন ভাবে জড়িয়ে গেলেন এই পরিকল্পনায়।
কিন্তু ডাবল এজেন্টদের বিশ্বাসঘাতকতা, আমেরিকা থেকে অস্ত্রের জাহাজ আসতে দেরি - সব মিলিয়ে ভেস্তে গেল গদর বিদ্রোহের পরিকল্পনা। অভ্যুত্থানের পরিকল্পনার মাথাদের গ্রেফতার করল ব্রিটিশ ইন্টেলিজেন্স। শুধু একজন বাদে। রাসবিহারী বসু। তাঁর মাথার দাম ঘোষণা করেছে ব্রিটিশ সরকার। আন্ডারগ্রাউন্ড অবস্থায় বেশিদিন আর টানতে পারবেন না বুঝতে পারছেন তিনি। আমেরিকায় পিংকার্টন থেকে কলকাতার সিআইডি, আন্তর্জাতিক স্তর থেকে ধরপাকড় চলছে। তবে কি ইন্টারন্যাশনাল কোনও সেলেব্রিটিই পারেন তাঁকে উদ্ধার করতে?
ঠাকুর সহায় হলেন। মানে রবিঠাকুর। সদ্য নোবেল বিজয়ী রবীন্দ্রনাথ তখন আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্ব তো বটেই। তাঁর জাপান যাত্রা নিয়ে তখন বাজার সরগরম। রাসবিহারী বসু শেষে রবীন্দ্রনাথের কাল্পনিক আত্মীয় প্রিয় নাথ ঠাকুর সেজে জাপানের জাহাজে চড়ে বসলেন তিনি। পূর্ব এশিয়ার রাজনীতির ঘূর্ণিপাকে তিনি কি সংকেত পেয়েছিলেন আমরা জানি না, কিন্তু ব্রিটিশ রাজের বিরুদ্ধে সেনা তৈরির কাজ তাঁর জাপান অধ্যায় থেকেই শুরু। কিংবা বলা ভালো তাঁর হাতে রান্না একবাটি চিকেন কারি থেকে ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মির পরিকল্পনা শুরু।
চিকেন কারি। জাপানী রসনায় তুমুল আলোড়ন তুলল ফেরারি আসামি রাসবিহারী বসুর রান্না। তখন তিনি অবশ্য শুধু ব্রিটিশ পুলিশের মোস্ট ওয়ান্টেড আসামি নন, তিনি তখন বোস অফ নাকামুরায়া, জাপানের প্রসিদ্ধ শেফ, যাঁর হাতের চিকেন কারি খেতে নাকামুরায়া রেস্টুরেন্টে কেষ্ট বিষ্টুরাও উপস্থিত হন।
রসবতী দিয়ে জাপানের হৃদয় আর রেস্টুরেন্টের মালিকের মেয়ে তোশিকো সোমাকে বিয়ে করে জাপানের মানুষের বিশ্বাস জিতেছিলেন রাসবিহারী বসু। সারাজীবন ধরে ফান্ড জোগাড় করে গিয়েছেন ফৌজ গড়ার জন্য। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ যখন চরমে, জার্মানি থেকে সুভাষ চন্দ্র বসুকে ডাক দিলেন তিনি। সময় হয়েছে, আঘাত হানতে হবে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের ওপরে। দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় জাপানের হাতে বন্দি ব্রিটিশ সেনার অধিকাংশ ভারতীয়। তাঁদের নিয়ে শক্তি বাড়িয়েছে আজাদ হিন্দ ফৌজ। চাই এবার একজন সেনাপতি।
এমন সেনাপতি যিনি সরাসরি বলবেন তোমরা যে যুদ্ধে যাচ্ছ সেখান থেকে বেঁচে ফিরবে না। কিন্তু তোমাদের দেশ স্বাধীন হবে। তোমাদের যুদ্ধ মিথ্যে হবে বা। তোমরা অমর হয়ে থাকবে স্বাধীনতার যুদ্ধে শহীদ হয়ে। যে সেনাপতি যুদ্ধের মিছিলে ডাক দেবেন মেয়েদের। ঝাঁসি ব্রিগেড। আজাদ হিন্দ ফৌজের সামনে ঢাল হয়ে দাঁড়িয়ে যাবে। যে সেনাপতির নির্দেশে ফৌজের ব্রাহ্মণ মুচি মুসলমান খ্রিস্টান সেনা এক সারিতে বসে খাবেন। যিনি অনাথ অ্যাংলো ইন্ডিয়ান ছেলে মেয়েদের ব্রিটিশ ভাড়াটে সৈন্য থেকে ভারতের স্বাধীনতার যোদ্ধা বানাবেন। যাদের জন্মাবধি বাপ মা দেশ পরিবার কৌলীন্য কিচ্ছু ছিলো না, তাঁরা পাবেন একটা আস্ত দেশ, অমর হয়ে থাকবেন শহীদ হাবিলদার স্টেলা,, শহীদ হাবিলদার জোসেফাইন হয়ে। এমন একজন সেনাপতি, যার উদ্দেশ্যে নাগাল্যান্ডের জঙ্গলে সর্বাঙ্গে ঘা নিয়ে অনাহারে ধুঁকতে ধুঁকতে শেষ সময়ে যোদ্ধা তাঁর সতীর্থকে বলবেন, “নেতাজিকে বোলো, আমরা শেষ অবধি লড়েছি। যেমন তাঁকে কথা দিয়েছিলাম, জীবন দিয়েছি। বোলো কিন্তু, আমরা হাল ছাড়ি নি। জয় হিন্দ!”
আজাদ হিন্দ ফৌজ মৃত্যুভয় জয় করেছিল। কিন্তু আকাশ ছুঁতে পারেনি। বিমান বাহিনীর জন্য তাদের ভরসা ছিলো জাপান। যখন ফৌজ সম্মুখ সমরে গুড়িয়ে দিচ্ছে ব্রিটিশ প্রতিরোধ তখন মার্কিন সেনা পুরোদমে যুদ্ধে নামল প্রশান্ত মহাসাগরের আকাশে। জাপানের সমস্ত শক্তি জড়ো হলো সেখানে। আজাদ হিন্দ ফৌজের কোনও বায়ু সেনা না থাকায় এক তরফা ইঙ্গ মার্কিন বিমান হানায় বিধ্বস্ত হয়ে পড়ল আজাদ হিন্দ ফৌজের কোহিমা বেস। এমন সময় রেঙ্গুনে ব্রিটিশ বাহিনী ফিরে এলো ক্ষমতায়। ফৌজের খাদ্য সরবরাহ গেল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে। উত্তর পূর্ব ভারতে সে বছর বর্ষা নামল সময়ের আগে। বৃষ্টি, হড়পা বান, পোকার উপদ্রব, খাদ্যের অভাবে পিছু হটতে বাধ্য হলো আজাদ হিন্দ ফৌজ।
আজাদ হিন্দ ফৌজ বিজয়ী হয়ে দিল্লি পৌঁছতে পারে নি। কিন্তু দেশের হৃদয়ে তারা ঠিকই পৌঁছেছিল। নেতাজির রহস্যময় অন্তর্ধানের পর যখন আজাদ হিন্দ ফৌজকে অক্ষশক্তির অংশ হিসেবে কাঠগড়ায় তুলছে ব্রিটিশ, চলছে যুদ্ধবন্দীদের বিচার, অভাবনীয় ভাবে প্রত্যাঘাত এলো ব্রিটিশ ভারতীয় সেনার তরফ থেকে।
১৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৬। এইচএমআইএস তলওয়ার জাহাজে ব্রিটিশ অফিসারদের নাকের ডগায় ইউনিয়ন জ্যাক নামিয়ে তোলা হলো ভারতের পতাকা। গোটা বিশ্বযুদ্ধ ব্রিটেনের হয়ে লড়েছেন যে ভারতীয়রা, জাপানের গুলি বোমার মোকাবিলা করেছেন যে বাদামি চামড়ার ভারতীয় সেনা, তাঁদের প্রমোশন দূরে থাক, খাবার, শোবার ব্যবস্থাও মানুষের যোগ্য নয়। তুলনায় ঢের কম কাজ জানা শ্বেতাঙ্গরা অফিসার হয়ে বসছেন। জাপান যুদ্ধে হেরে যাবার পরে বেছে বেছে ভারতীয় সেনাদের বিনা বেতনে ছাঁটাই শুরু হয়েছে। এমন অবস্থায় রয়্যাল ইন্ডিয়ান নেভি বম্বেতে ধর্মঘটের ডাক দিল। দাবানলের মত দেশে ছড়িয়ে পড়ল বিদ্রোহের আগুন। বম্বে, করাচি, পুণে, ভাইজাগ, মাড্রাস্, কোচি থেকে কলকাতা - দেশের উপকূল জুড়ে ২০ হাজার নৌ সেনা ধর্মঘটে যোগ দিলেন। বিদ্রোহী জাহাজে বোমা ফেলতে ডাকা হলো রয়েল ইন্ডিয়ান এয়ার ফোর্স। বিধি বাম, এয়ার ফোর্স মুখ ঘুরিয়ে নিলো হুকুম থেকে। করাচির গোর্খা বাহিনী নাকচ করে দিল বিদ্রোহী সেনার ওপরে গুলি চানালোর অর্ডার। দ্রোহ। দ্রোহ। সিপাহী বিদ্রোহ যা পারেনি, উননব্বই বছর পর নৌ বিদ্রোহ তাই করল। বিদ্রোহী সেনার সমর্থনে চাষী, মজুর নেমে এলেন রাস্তায়। নির্বিচারে গুলি চালিয়েও দ্রোহের আগুন নেভাতে ব্যর্থ হলো ব্রিটিশ বাহিনী। শেষ মেশ আসরে নামলেন কংগ্রেস এবং মুসলিম লিগের নেতৃত্ব। হিন্দু মুসলিম বিভেদের ধ্বজা উড়িয়ে দেশভাগের স্বাধীনতার পরিকল্পনায় জল ঢেলে ঢেলে দেবার ক্ষমতা রাখে জাতপাত হিন্দু মুসলিম সাম্প্রদায়িকতা মুক্ত এই সামরিক অভ্যুত্থান। কিন্তু সামরিক অভুত্থান আবার বহুদলীয় গণতন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক। কাজেই নৌ বিদ্রোহ মিটিয়ে নিতে বললেন বল্লভ ভাই প্যাটেল। আশ্বাস দিলেন, বিদ্রোহী সেনাদের কোনও আশংকার কারণ নেই, তাঁদের সসম্মানে পুনর্বহাল করা হবে। বিদ্রোহী সেনারা আত্ম সমর্পণ করলেন, কিন্তু অচিরেই বুঝলেন বল্লভ ভাই প্যাটেল এবং বাকি কংগ্রেস ও মুসলিম লিগ নেতৃত্ব হাত ধুয়ে ফেলেছেন। চরম হেনস্থার মধ্যে বন্দি হলেন বিদ্রোহী সেনা নায়করা। হাজারে হাজারে সেনা বরখাস্ত হয়ে বন্দর থেকে পেলেন গলাধাক্কা। স্বাধীনতার স্বাদ বিশ্বাসভঙ্গের চেয়েও তীব্র, তাই না?
আজাদ হিন্দ ফৌজ ব্রিটিশ রাজকে ভয় দেখিয়েছিলো। আর নৌ বিদ্রোহ ব্রিটিশ রাজের কোমর ভেঙে দিয়েছিলো। সাতচল্লিশ সালের মধ্যে ব্রিটিশ রাজের ভারত ছাড়ার আর কোনও জোরালো কারণ ঐতিহাসিকরা দেখতে পান না। রাজনীতির খেলায় আজাদ হিন্দ ফৌজের অন্তর্ভুক্ত কেউ ঠাই পাননি স্বাধীন ভারতের সেনাবাহিনীতে অথবা দলতন্ত্রে। বল্লভ ভাই প্যাটেল এ ব্যাপারে সাফ জানিয়েছেন তিনি নিজে খেয়াল রেখেছিলেন যাতে সামরিক অভ্যুত্থানের কোনও অংশ স্বাধীন ভারতে লেগাসি না রেখে যায়।
দেশভাগের বিনিময়ে আসা স্বাধীনতার স্বাদ আসলে কি স্ব-বিরোধী? সাম্প্রদায়িক সমস্যায়, যুদ্ধে জেরবার হয়ে হিন্দুস্তান পাকিস্তান ফের শরণ নেবে ব্রিটেনের, অস্ত্রে অর্থে তৈরি হবে ইউরোপ আমেরিকার নতুন বাজার - এই টার্গেট ছিলো তদানীন্তন ব্রিটেনের? আজাদ হিন্দ বাহিনী এখন গল্প কথার অংশ। নৌ বিদ্রোহের নায়কদের কথাও বড় সহজে আমরা ভুলে যেতে পেরেছি। অথচ এত চেষ্টা এত পরিকল্পনা সত্বেও তেরঙ্গা পতাকাকে সেলাম জানাতে আজও ধনকুবের থেকে মুটে মজুর সব ভারতবাসী কপালে হাত ঠেকিয়ে বলেন জয় হিন্দ।
স্বাধীনতার স্বাদ আসলে জন্মগত ভাবে অর্জিত স্মৃতি যা কিনা মানুষের ডিএনএ তে ঢুকে আছে। কাটাতারের জ্বালা, উপনিবেশের অভ্যাস সব ছাপিয়ে সে স্মৃতি যখন দখল নেয় মগজের, তখন বিস্মৃত শহীদদের নামে জ্বালানো অমর জ্যোতির আঁচ একটু বাড়ে। স্বাধীনতার স্বাদ জানে যুদ্ধের সাইরেন, জানে জালিয়ানওয়ালবাগ থেকে হিজলি ডিটেনশন ক্যাম্পের রক্তমাখা পাঁচিল। স্বাধীনতার স্বাদ জানে মন্বন্তরের করাল খিদে। স্বাধীনতার স্বাদ জানে রেনকোজি মন্দিরের বিতর্কিত স্মৃতি সৌধ। প্যারেড করার পর একদিন সুভাষ বসু ঝাঁসির রানী ব্রিগেডের এক রানিকে বলেছিলেন, “আমার জন্য ভেবো না তোমরা। ব্রিটিশ না আমাকে জ্যান্ত পাবে, না মৃত।” সে সংকল্প সত্যি হয়েছে। আমাদের সুভাষ ঘরে ফেরে নাই। দেশ স্বাধীন হয়েছে। জাতপাত, সাম্প্রদায়িকতা, বৈষম্য থেকে কবে স্বাধীন হব আমরা জানি না, তবে তিনশো বছরের উপনিবেশের হ্যাং ওভার ছাপিয়ে একদিন জিতে যাবে স্বাধীনতার স্বাদ সেটুকু স্বপ্ন তো দেখিই।
বন্দে মাতরম। জয় হিন্দ।
আমাদের স্বাদের এই সব স্মৃতির উত্তরাধিকার থাক,
অন্ন বস্ত্র মাটির স্বাধীনতা অক্ষুন্ন থাক, এটুকুই আশা। আমরা মনে রাখি অন্নের সুষম বন্টনেই মঙ্গল।
প্রকৃত রসমঙ্গল।
ধাঁধা
সা রে গা মা পা ধা নি
বোম ফেলেছে জাপানি
বোমার ভিতর কেউটে সাপ
ব্রিটিশ বলে বাপ রে বাপ
তথ্যসূত্র
বই
- শ্রী শৈলেশ দে. আমি সুভাষ বলছি
- মধুময় পাল সম্পাদিত. ক্ষুধার্ত বাংলা
প্রবন্ধ
- Senjuti Mallik. Colonial Biopolitics and the Great Bengal Famine of 1943. Geojournal 88, 3205–3221. 2023
- Aarifa Nadeem. The Story of the 1946 Indian Naval Mutiny
- Yash Mishra. Rash Behari Bose: A ‘Revolutionary Chef’
- How the End of World War II Made Us Fat. Academic Earth
- Michael Safi. Churchill's policies contributed to 1943 Bengal famine – study